‘ফেক নিউজ’ ভারতে বেশি

ফানাম নিউজ
  ২৬ অক্টোবর ২০২১, ২০:০২

জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘ফেক নিউজ’ বেশি ছড়ায় ভারতে। তা ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের পর সবচেয়ে বড় উদ্যোগ ভারতে নিয়েছে কোম্পানিটি। এসব উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে স্থানীয় দশটির ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থার সঙ্গে পার্টনারশিপ। পুরো নেটওয়ার্কজুড়ে ইংরেজি ও অপর ১১টি ভারতীয় ভাষায় ফ্যাক্ট চেক করা হচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস ও অন্যান্য মিডিয়া যোগাযোগমাধ্যমটির অভ্যন্তরীণ নথি দ্য ফেসবুক পেপার্স হাতে পেয়েছে। এসব নথিতে উঠে এসেছে, সবচেয়ে বড় বাজার ভারতে ফেক নিউজ, বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ও উসকানিমূলক কনটেন্ট- সহিংসতার উদযাপনের অনেক কিছু ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে ফেসবুক।

ফ্যাক্ট-চেক করা ফেসবুকের ভুয়া তথ্য ঠেকানোর উদ্যোগের একটি অংশ মাত্র। ভারতের এই সমস্যা আরও বিশাল। বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের ছড়াছড়ি, বট ও ভুয়া অ্যাকাউন্ট ভারতীয় রাজনীতিক ও দলের সঙ্গে সম্পর্কিত, মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের টার্গেট করে ভুয়া তথ্য ছড়ায় বিভিন্ন পেজ ও বড় বড় গ্রুপ। সুসংগঠিত ও সতর্কভাবে দেশটিতে ভুয়া তথ্য ছড়ানো হয়। নির্বাচন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো ঘটনা এবং করোনাভাইরাস মহামারিতে ফেক নিউজ ব্যাপকভাবে ছড়ায়।

বিবিসি’র খবরে বলা হয়েছে, ভারতে পরিস্থিতি খুব জটিল। ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থাগুলো সন্দেহজনক নিউজ ও পোস্টগুলোকে ক্রস টেক করে ফেসবুককে জানায়। এরপর প্রত্যাশা থাকে ফেসবুকে এমন পোস্ট বা কনটেন্টের বিতরণ কমাবে।

এক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থার সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, একটি নিউজ বা পোস্ট ভুয়া বলে চিহ্নিত করার পর ফেসবুক কী করবে সে বিষয়ে আমাদের নৈতিক বা আইনি কোনও এখতিয়ার নেই।

স্বাধীন ফ্যাক্ট-চেকিং ওয়েবসাইট অল্ট নিউজের সহ-প্রতিষ্ঠাতা প্রতীক সিনহা বলেন, ভারতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া তথ্যের বেশিরভাগের জন্য ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতিকরা। তাদের বড় ধরনের সমর্থক রয়েছে কিন্তু ফেসবুক তাদের ফ্যাক্ট-চেক করে না।

তিনি আরও বলেন, কোনও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমই অভিযোগের ঊর্ধ্বে না।

বিবিসি’র খবরে বলা হয়েছে, টুইটারেও ভারতে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য, সংখ্যালঘু ও নারীদের ব্যঙ্গ ও আক্রমণ করা হয়। ফেসবুকের মালিকানাধীন হোয়াটঅ্যাপ ফেক নিউজের সবচেয়ে বড় বাহন। গুগলের মালিকানাধীন ইউটিউবে ফেসবুক ও গুজব ছড়ালেও তা ফেসবুকের মতো মনোযোগ আকর্ষণ করে না।

বিবিসি’র প্রতিবেদনে উদাহরণ হিসেবে গত বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু নিয়ে ষড়যন্ত্র হাজির করে ১২ ঘণ্টা দীর্ঘ একটি লাইভ ভিডিও ছিল।

কোম্পানিটির এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ফেসবুক এসব বিষয়ে অবগত হওয়ার পর ভারতের সুপারিশমালা নিয়ে গভীর ও কঠোর বিশ্লেষণ করেছে এবং উন্নতির জন্য পণ্যে পরিবর্তন এনেছে।

হিন্দি ও বাংলাসহ বিভিন্ন ভাষায় বিদ্বেষমূলক বক্তব্য শনাক্তের প্রযুক্তিতে বড় ধরনের বিনিয়োগ করেছে কোম্পানি। এর ফলে এই বছরের প্রথম ছয় মাসে আমরা তা কমিয়ে আনতে পেরেছি। এখন তা ০.০৫ শতাংশ। মুসলিমসহ প্রান্তিক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়েই বিদ্বেষমূলক বক্তব্য বাড়ছে। তাই আমরা প্রয়োগ বাড়াচ্ছি এবং নীতি হালনাগাদ করতে অঙ্গীকারবদ্ধ।