শিরোনাম
শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট তড়িঘড়ি সাধারণ নির্বাচনের পথ তৈরি করতে পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছেন। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ক্ষমতা গ্রহণের পরদিনই পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছেন। মঙ্গলবার সরকারি এক গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে পার্লামেন্টে ভেঙে দেওয়ার আদেশ দেন তিনি।
অনুরা কুমার দিশানায়েকে এবং তার নতুন মন্ত্রিসভাকে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের দায়িত্ব নিতে হবে।
তাই তিনি পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে আগামী সাধারণ নির্বাচনের পথ সুগম করেছেন। তার বামঘেঁষা জাতীয় জনশক্তি জোট (এনপিপি) দেশটির ২২৫ আসনের পার্লামেন্টে মাত্র তিনটি আসনে জয় পেয়েছে। তাই পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে নিজের নীতি বাস্তবায়নের জন্য নতুন করে জনসমর্থন চাওয়ার দিকে গেলেন তিনি।
সরকারিভাবে গেজেটে প্রকাশিত একটি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, নির্বাচন আগামী ১৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। যা নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক বছর আগেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
এদিকে নতুন রাষ্ট্রপতি মঙ্গলবার তার মিত্র হরিণি অমরাসুরিয়াকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করেছেন। দেশের ইতিহাসে তৃতীয়বারের মতো একজন নারী প্রধানমন্ত্রীকে বেছে নিয়েছেন তিনি।
৫৪ বছর বয়সী হরিনি একসময় সমাজবিজ্ঞানের প্রভাষক ছিলেন।
বর্তমানে তিনি লিঙ্গ সমতা এবং সংখ্যালঘু অধিকার বিষয়ক একজন কর্মী। অমরসুরিয়া ২০১৯ সালে দিসানায়েকের সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন এবং পরের বছর সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। তার জনসেবামূলক কর্মকাণ্ড শুরু হয় ২০১১ সালে, যখন তিনি বিনামূল্যে শিক্ষার দাবিতে আন্দোলনে যোগ দেন। বিভিন্ন সামাজিক ন্যায়বিচার ইস্যুতে তার সক্রিয় ভূমিকার জন্য পরিচিত হয়ে উঠেছেন।
২০২২ সালে গণবিক্ষোভের মুখে শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। তখন কোভিড মহামারীর পাশাপাশি দুর্বল রপ্তানিসহ নীতিগত ত্রুটির কারণে শ্রীলংকায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল। সরকারি ঋণের পরিমাণ ৮৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল এবং মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায় ৭০ শতাংশ। এ ঘটনার জন্য রাজাপাকসে ও তার সরকারকেই দায়ী করা হয়।
রাজাপাকসের উত্তরসূরি প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে অর্থনৈতিক সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়ায় মূল্যস্ফীতি কমেছে, দেশটির রুপিও শক্তিশালী হয়েছে। কিন্তু মানুষের দুর্দশা এখনও কাটেনি। এবার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের স্থলাভিষিক্ত হলেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট দিশানায়েকে। বিক্রমাসিংহে তার উত্তরসূরিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘এই প্রিয় জাতির প্রতি গভীর ভালোবাসা ও সম্মানের সঙ্গে আমি এর ভবিষ্যৎ নতুন প্রেসিডেন্টের হাতে তুলে দিচ্ছি।’
অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য দিশানায়েকে উৎপাদন, কৃষি ও তথ্যপ্রযুক্তির মতো খাতগুলোর উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি শ্রীলঙ্কাকে অর্থনৈতিক সংকট থেকে উদ্ধার করার জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সঙ্গে করা চুক্তি চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে তিনি দেশের দরিদ্রতম মানুষের ওপর সংস্থাটির কঠোর প্রভাব কমানোর চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন।
সূত্র : বিবিসি