শিরোনাম
ভারতীয় প্রবাসী শ্রমিককে হত্যায় জড়িত সন্দেহে ইতালির এক কৃষিজমির মালিককে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ। ভারত থেকে আসা অনথিভুক্ত ওই শ্রমিকের নাম সাতনাম সিং (৩১)। গত ১৭ জুন রোমের দক্ষিণে লাতিনার গ্রামাঞ্চলে বোরগো সান্তা মারিয়ার একটি খামারে কাজ করার সময় মেশিনে আঘাত পান তিনি। এতে তার ডান হাত পুরোপুরি শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
অভিযোগ রয়েছে, জমির মালিক রক্তাক্ত ওই শ্রমিককে বাড়ির সামনে ফেলে রেখে চলে যান। প্রসিকিউটাররা জানিয়েছেন, কোনো অ্যাম্বুলেন্সও ডাকা হয়নি। আন্তোনেলো লোভাতো নামের এক নিয়োগকর্তার কৃষি কোম্পানিতে ফল মোড়ানোর কাজ করতেন সাতনাম।
সাতনাম সিংয়ের মৃত্যুতে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে ইতালিতে। সুস্থ কাজের পরিবেশের দাবিতে সংগঠন এবং খামার শ্রমিকরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। ইতালির কৃষিখাতের কাজে স্বল্প বেতনভুক্ত অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য শোষণমূলক ‘কাপোরালাতো’ ব্যবস্থা বন্ধ করার আহ্বান জানান তারা। এমনকি প্রেসিডেন্ট সের্গিও মাতারেল্লা ওই মামলার গুরুত্বের কথা বলেছেন। সাতনামের মতো শ্রমিকদের ‘নিষ্ঠুর’ শোষণ এবং ‘অমানবিক’ অবস্থার প্রসঙ্গ উঠে এসেছে তার কথায়। ইতালিতে আসা মৌসুমি শ্রমিকেরা প্রায়ই এমন পরিস্থিতিতে কাজ করেন।
ইতালির পুলিশের বিশেষ শাখা কারাবিনিয়ারি এক বিবৃতিতে বলেছে, রোমের দক্ষিণে একটি বৃহত্তর কৃষিপ্রধান এলাকা লাতিনার খামারের মালিক আন্তোনেলো লোভাতোকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ফরেনসিক পরীক্ষায় জানা যায়, ‘প্রচুর রক্তক্ষরণের’ ফলে মৃত্যু হয় সাতনামের। ফরেনসিক পরীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে, দ্রুত চিকিৎসাসেবা পেলে তিনি প্রাণে বেঁচে যেতেন। প্রসিকিউটরদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নাইলন-ব়্যাপিং মেশিনে আটকে ভারতীয় ওই শ্রমিকের হাত ভেঙে যাওয়ার পর কোনও অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হয়নি।
স্থানীয় দৈনিক কোররিয়েরে দেল্লা সেরা বিচারক জোসেপ্পে মোলফেসের স্বাক্ষরিত গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বরাত দিয়ে বলেছে, ওই ট্রাক্টর লোভোতো চালাচ্ছিলেন। ট্রাক্টরটি নাইলন-ব়্যাপিং মেশিনটি টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। রক্তক্ষরণ হওয়া সত্ত্বেও সাতনামকে বাড়ির বাইরে রেখে চলে যান খামারের মালিক লোভোতো।
ইতালির সংবাদ প্রতিবেদনে প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, সাতনাম সিংয়ের স্ত্রী ওই খামারে কাজ করতেন। তিনি বলেছেন, লোভোতো অ্যাম্বুলেন্স ডাকার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেন। দাবি করেন, সাতনাম মারা গেছেন। ইনফোমাইগ্রেন্টস।