গাজায় যুদ্ধ বন্ধে ১৩৫ দিনের চুক্তির প্রস্তাব হামাসের

ফানাম নিউজ
  ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৮:০৪

গাজায় যুদ্ধ বন্ধে তিন ধাপে ১৩৫ দিনের চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, হামাসের হাতে জিম্মি সব ইসরায়েলিকে ছেড়ে দেওয়া হবে। বিনিময়ে, অবরুদ্ধ উপত্যকা থেকে ইসরায়েলকে সব সৈন্য ফিরিয়ে নিতে হবে এবং বন্দি ফিলিস্তিনি নারী-শিশুদের মুক্তি দিতে হবে।

গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে গত সপ্তাহে কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতাকারীরা যে প্রস্তাব দিয়েছিল, সেটির জবাবেই এসব শর্ত দিয়েছে হামাস। ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর গত পাঁচ মাসের মধ্যে সংঘাত বন্ধে এটিই সবচেয়ে বড় কূটনৈতিক প্রচেষ্টা বলে উল্লেখ করা হচ্ছে।

হামাসের দেওয়া প্রস্তাবের একটি নথি হাতে পেয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। নথিতে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতির প্রথম ৪৫ দিনে হামাসের হাতে জিম্মি সব ইসরায়েলি নারী, ১৯ বছরের কম বয়সী পুরুষ এবং অসুস্থ ব্যক্তিদের মুক্তি দেওয়া হবে। বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি নারী ও শিশুদের মুক্তি দিতে হবে। এই ধাপে, গাজার জনবহুল এলাকাগুলো থেকে সৈন্যদের ফিরিয়ে নেবে ইসরায়েল।

তবে, উভয় পক্ষ ‘পারস্পরিক সামরিক অভিযান সমাপ্ত করতে এবং সম্পূর্ণ শান্ত অবস্থায় ফিরে আসার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে পরোক্ষ আলোচনা শেষ না করা পর্যন্ত’ চুক্তির দ্বিতীয় পর্যায়ের বাস্তবায়ন শুরু হবে না।

দ্বিতীয় পর্যায়ে, বাকি পুরুষ জিম্মিদের মুক্তি এবং গাজার সব এলাকা থেকে ইসরায়েলি সৈন্যদের পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হবে। তৃতীয় পর্যায়ে মরদেহ এবং দেহাবশেষগুলো বিনিময় করা হবে।

সমঝোতাকারীদের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, হামাসের প্রস্তাবে শুরুতেই স্থায়ী যুদ্ধবিরতির গ্যারান্টির কথা বলা হয়নি। তবে সবশেষ জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার আগে অবশ্যই যুদ্ধ বন্ধে সম্মত হতে হবে।

দ্বিতীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি বহাল থাকবে এবং জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চুক্তিটি ভেঙে পড়বে না, সে বিষয়ে কাতার, মিসরসহ অন্যান্য বন্ধুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রগুলোর কাছে গ্যারান্টি চায় হামাস।

সূত্রের ভাষ্যমতে, তারা (হামাস) চায়, আগ্রাসন বন্ধ হোক, কিন্তু সেটি সাময়িকভাবে যেন না হয়, যেখানে ইসরায়েলিরা জিম্মিদের নিয়ে যায় এবং পরবর্তীতে ফিলিস্তিনিরা জাঁতাকলের ভেতর বাস করে।

হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য ইজ্জাত এল-রেশিক রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন, তাদের প্রস্তাবটি মিসর এবং কাতারের মাধ্যমে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পাঠানো হয়েছে।

প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা করতে এরই মধ্যে ইসরায়েলে পৌঁছেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। সেখানে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা বলবেন তিনি। ইসরায়েলে যাওয়ার আগে কাতার-মিসরের মধ্যস্থতাকারী নেতাদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।