শিরোনাম
শ্রীলঙ্কার জলসীমায় অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে ভারতীয় জেলেরা মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে বলে বহু বছর ধরে অভিযোগ করে আসছেন লঙ্কান জেলেরা। ভারতীয়দের ঠেকাতে সরকার কখনোই পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়নি বলেও অভিযোগ তাদের। রোববার (১৭ অক্টোবর) সম্মিলিতভাবে এসবের প্রতিবাদ জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কার জেলে ও বিরোধী দলীয় নেতারা।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, রোববার কালো পতাকা উড়িয়ে শ্রীলঙ্কার উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় শহর মুলাইত্তিভু থেকে দেশটির সর্বউত্তরের প্রান্ত পয়েন্ট পেদ্রো পর্যন্ত প্রায় ১০০ কিলোমিটার পাড়ি দেয় লঙ্কান জেলেদের বিশাল নৌবহর। এসময় তাদের সঙ্গে ছিলেন বিরোধী দলীয় নেতারা।
তামিল বিরোধী দল টিএনএ’র (তামিল ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স) সদস্য এম এ সুমানথিরান পয়েন্ট পেদ্রোতে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা সমুদের তলদেশ থেকে ভারতীয় জেলেদের মাছ ধরে নিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদ করতে এসেছি।
শ্রীলঙ্কায় বটম ট্রলিং বা সমুদ্রের তলদেশ থেকে মাছ ধরা ২০১৭ সাল থেকে নিষিদ্ধ। বটম ট্রলিংয়ে সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের মারাত্মক ক্ষতি হয় বলে জানা যায়।
টিএনএ জানিয়েছে, তারা ভারতীয় জেলেদের অনধিকারপ্রবেশ বন্ধ এবং দরিদ্র লঙ্কান মৎস্যজীবী সম্প্রদায়কে রক্ষায় শ্রীলঙ্কা কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতার প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে লঙ্কান সরকারের কোনো মন্তব্য জানা যায়নি।
কলম্বো থেকে আল-জাজিরার সংবাদদাতা মিনেলে ফার্নান্দেজ জানান, ভারতীয় জেলেদের অনুপ্রবেশ নিয়ে বহু বছর ধরেই অভিযোগ করে আসছেন শ্রীলঙ্কার মৎস্যজীবীরা। তিনি বলেন, এর মূল কারণ জীবিকা। শ্রীলঙ্কার জেলেরা চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাওয়া এবং তাদের ভাষ্যমতে, লঙ্কান জলসীমায় ঢুকে ভারতীয়দের ব্যাপক হারে মূল্যবান মাছ ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয় এটি।
ফার্নান্দেজ জানান, ২০১৭ সালের আইন আরও শক্তভাবে প্রয়োগ এবং দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবিতেই রোববার নৌবহর নিয়ে বেরিয়েছিলেন লঙ্কান জেলেরা।
দুই প্রতিবেশীর উত্তেজনা
সরু পক প্রণালী দিয়ে বিভক্ত ভারত ও শ্রীলঙ্কা। সামুদ্রিক এই অঞ্চলটিতে বিপুল পরিমাণ চিংড়ি পাওয়া যায়। সেগুলো ধরা নিয়েই মূলত দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
আল-জাজিরার খবর অনুসারে, কয়েক দশক ধরে চলা গৃহযুদ্ধের সময় লঙ্কান জেলেদের মাছ ধরতে বেরোনো বন্ধ ছিল। সেই সময় ভারতীয়রা অনেকটা অবাধে পক প্রণালী থেকে মাছ ধরেছে। কিন্তু ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কায় গৃহযুদ্ধের অবসান ও জেলেদের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর থেকে শুরু হয় উত্তেজনা।
শ্রীলঙ্কায় নিয়মিত বহু ভারতীয় জেলে আটক ও তাদের নৌকা জব্দ হয়। এরপরও ভারতীয়দের অনুপ্রবেশ বন্ধের কোনো লক্ষণ নেই। ২০১৭ সালের মার্চ মাসে লঙ্কান বাহিনীর হাতে এক ভারতীয় জেলে নিহত হওয়ারও খবর শোনা যায়।