যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে রাশিয়ার পথে কিম জং উন

ফানাম নিউজ
  ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৩:১৮

যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে রাশিয়ায় যাচ্ছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের জন্য এরই মধ্যে তিনি ভ্লাদিভোস্তকের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। যদিও রাশিয়া বা উত্তর কোরিয়া কেউই আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।

গত মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যে, উত্তর কোরিয়া যদি রাশিয়ার সঙ্গে অস্ত্র চুক্তি করে থাকে, তাহলে কিম জং উনকে চরম মূল্য দিতে হবে।

মার্কিন বার্তা সংস্থা সিএনএন বলছে, যদি সফরটি সত্যিই ঘটে, তাহলে করোনা মহামারির পর এটিই হবে কিমের প্রথম বিদেশ সফর। গত তিন বছরের বেশি সময় ধরে সীমান্ত বন্ধ রেখেছিল উত্তর কোরিয়া। তবে সম্প্রতি ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে শুরু করেছে দেশটি।

এক সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার গণমাধ্যম জানিয়েছে, কিম বিদেশ সফরের জন্য যে সাঁজোয়া ট্রেনটি ব্যবহার করেন, সেটি পিয়ংইয়ং ছেড়ে গেছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবারের শুরুর দিকে পুতিন-কিম বৈঠকটি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগে রুশ বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স আগেই জানিয়েছিল, সামনেই রাশিয়া সফর করবেন কিম।

এর আগে গত সপ্তাহে মার্কিন কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছিলেন, দুই দেশের মধ্যে অস্ত্রচুক্তি সম্পর্কিত আলোচনার অগ্রগতি অর্জনে খুব দ্রুত একত্রিত হবেন কিম ও পুতিন। যদিও সম্ভাব্য এ বৈঠকের কোন নির্দিষ্ট তারিখ বা অবস্থান জানাতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র।

এদিকে, ক্রেমলিন জানিয়েছে, এ বিষয়ে কিছু বলার নেই। তবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই সপ্তাহে মস্কো থেকে ৬ হাজার ৫০০ কিলোমিটার (৪ হাজার মাইল) পূর্বে রাশিয়ার প্রশান্ত মহাসাগরীয় বন্দর ভ্লাদিভোস্টকের একটি অর্থনৈতিক ফোরামে বক্তব্য দেবেন।

ভ্লাদিভোস্টক উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে রাশিয়ার সীমান্ত থেকে মাত্র ১৩০ কিলোমিটার (৮০ মাইল) দূরে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, ভ্লাদিভোস্টকের রাস্তায় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পুলিশ দেখা গেছে। তাছাড়া ভ্লাদিভোস্টকের কেন্দ্রীয় চত্বরে অবস্থান নেওয়া রুশ নাগরিকরা বলছেন, তারা কিমের সফরের জন্য অপেক্ষা করছেন।

এর আগে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগুও জুলাই মাসে পিয়ংইয়ং থেকে অস্ত্র কেনার বিষয়ে আলোচনা করতে উত্তর কোরিয়া গিয়েছিলেন।

জানা গেছে, কিমের এ সফরে অন্তত ২০টি বুলেটপ্রুফ গাড়ি থাকবে। ফলে তাকে বহনকারী ট্রেনটি ঘণ্টায় ৫৯ কিলোমিটারের চেয়ে বেশি গতিতে ছুটতে পারবে না। ভ্লাদিভোস্তকে পৌঁছাতে পুরো দিন লেগে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি এর আগে বলেছিলেন, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু সাম্প্রতিক উত্তর কোরিয়া সফরের সময় পিয়ংইয়ংকে রাশিয়ার কাছে আর্টিলারি গোলাবারুদ বিক্রি করতে রাজি করানোর চেষ্টা করেছিলেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন এক সময়ে কিম-পুতিনের মধ্যে বৈঠক হতে যাচ্ছে, যখন রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া উভয়ের কাছেই এমন কিছু রয়েছে, যা অন্য দেশ চায়। রাশিয়া সম্ভবত উত্তর কোরিয়ার কাছে খাদ্য ও কাঁচামালের বিনিময়ে আর্টিলারি শেল ও রকেট আর্টিলারিসহ যুদ্ধাস্ত্র চাইবে। তাছাড়া জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক ফোরামে পিয়ংইয়ংয়ের অব্যাহত সমর্থন চাইবে।

সূত্র: সিএনএন