শিরোনাম
মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ কাচিনের হাপাকান্ত শহরে প্রবল বর্ষণের ফলে সৃষ্ট হড়কা বান ও ভূমিধসে একটি জেড পাথরের খনির অন্তত ৩৪ জন শ্রমিক ভেসে গেছেন। সোমবার (১৪ আগস্ট) স্থানীয় সময় সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
মিয়ানমারের দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজ শুরু করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উদ্ধারকর্মী জানান, গত কয়েকদিন ধরে হাপাকান্তে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। সোমবার সকালে হড়কা বানের সময় খনির একটি অংশ হঠাৎ ১৫০ থেকে ১৮০ মিটার (৫০০ থেকে ৬০০ ফুট) নিচে ধসে পড়ে। এতে খনিটির অন্তত ৩৪ জন শ্রমিক নিখোঁজ হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, আপাতত আমরা এর বেশি কোনো তথ্য দিতে পারবো না। নিখোঁজ শ্রমিকদের নাম-পরিচয় এখনো জানতে পারিনি। তাছাড়া, অনেকের মরদেহ এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
আরেকজন উদ্ধারকর্মী বলেন, ঘটনাস্থলে এখনো বৃষ্টি হচ্ছে ও আরও একটি ভূমিধসের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এরপরও আমরা নিখোঁজ শ্রমিকদের সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছি। তবে বেশিক্ষণ অনুসন্ধান চালাতে পারবো না বলে মনে হচ্ছে। কারণ এলাকাটি এখনো খুব ঝুঁকিপূর্ণ।
মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চালীয় প্রদেশগুলো প্রাকৃতিক সম্পদে খুবই সমৃদ্ধ। স্বর্ণ ও মূল্যবান পাথরের বেশ কয়েকটি খনি ও দামি কাঠের অরণ্য রয়েছে এ এলাকায়, যার মূল্য প্রায় ৩ হাজার কোটি ডলার। বহু বছর ধরে, সামরিক বাহিনী ও বিদ্রোহীরা কাচিন রাজ্যের এ অংশের উপর নিয়ন্ত্রণের জন্য লড়াই করে আসছে।
ক্ষমতাসীন জান্তা ও জান্তাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর আয়ের বড় একটি উৎস কাচিন ও অন্যান্য উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোর খনিজ ও বনজ সম্পদ বিক্রি থেকে প্রাপ্ত অর্থ। খনি ও অরণ্যের দখল নিয়ে সরকারি ও জান্তাবিরোধী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে প্রায়ই সংঘর্ষ ঘটে।
জানা যায়, বর্ষাকালে খনি এলাকাগুলোতে খনন ও আকরিক উত্তোলনে সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে মিয়ানমারে। কিন্তু সেই নির্দেশনা না মানায় প্রতি বছরই বর্ষাকালে দেশটির এ অঞ্চলে খনি দুর্ঘটনায় উল্লেখযোগ্যসংখ্যক প্রাণহানির সংবাদ পাওয়া যায়। ২০২০ সালে হড়কা বান ও ভূমিধসে কয়েকটি খনির শতাধিক শ্রমিক নিখোঁজ হয়েছিলেন, যাদের কাউকেই জীবিত পাওয়া যায়নি।
সূত্র: বিবিসি