শিরোনাম
অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে সব ধরনের বসতি স্থাপন কার্যক্রম বন্ধ করতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস। বসতি নির্মাণের অগ্রগতির পরিকল্পনাকে উত্তেজনা ও সহিংসতা এবং দীর্ঘস্থায়ী শান্তির পথে প্রধান বাধা হিসেবে বর্ণনা করেন তিনি।
সোমবার অধিকৃত পশ্চিম তীরে জেনিন শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বাহিনী অভিযান চালালে পাঁচজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরও ছিল। কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এই সংঘর্ষে আহত হয়েছে আরও ৯০ জনের বেশি মানুষ।
সম্প্রতি অধিকৃত পশ্চিম তীরে হাজার হাজার ভবন নির্মাণের অনুমতি দেওয়ার পরিকল্পনা পেশ করেছে ইসরায়েল। পশ্চিম তীরে বসতি সম্প্রসারণ না করার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ থাকার পরও এ পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটির কট্টোর ডানপন্থী সরকার।
ব্রিটিশি বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আগামী সপ্তাহে ইসরায়েলের সুপ্রিম প্ল্যানিং কাউন্সিলের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এ কাউন্সিলের আলোচ্যসূচিতেই রাখা হয়েছে পশ্চিম তীরের বিভিন্ন স্থানে চার হাজার ৫৬০টি হাউজিং ইউনিট স্থাপনের অনুমোদন দেওয়ার পরিকল্পনা। অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোতরিচকে এ বসতি স্থাপন ত্বরান্বিত করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
অবশ্য চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে এক হাজার ৩৩২টি হাউজিং ইউনিট। ইসরায়েলি অর্থমন্ত্রী বলেছেন, পশ্চিম তীরে আমরা বসতি স্থাপন করেই যাবো ও ওই ভূখণ্ডে ইসরায়েলের প্রভাব আরও বিস্তৃত করবো।
১৯৭৬ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে ইসরায়েলের দখল করে নেওয়া পশ্চিমতীরে বসতি স্থাপনকে বেশিরভাগ দেশই অবৈধ বলে বিবেচনা করে। ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি সংঘাতের অন্যতম মূল কারণও হচ্ছে, সেখানে ইহুদি বসতি সম্প্রসারণ।
ফিলিস্তিনিরা পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকা নিয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গড়তে চায়, যার রাজধানী হবে পূর্ব জেরুজালেম। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে শুরু হওয়া ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি আলোচনা সেই ২০১৪ সাল থেকে থমকে থাকায় বিষয়টি এখনো বাস্তবে রূপ নেয়নি।
গত বছরের ডিসেম্বরে ইসরায়েলের ক্ষমতায় ফিরে আসেন ডানপন্থি ইসরায়েলি নেতা বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। এর পর থেকেই পশ্চিম তীরে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। ইসরায়েলের আগ্রাসন আরবদের মধ্যে আরও গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে।
এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মহাসচিবের ডেপুটি মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, মহাসচিব পুনর্ব্যক্ত করেছেন যে, এ ধরনের বসতি স্থাপন আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। সোমবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, এই অবৈধ বসতি সম্প্রসারণ উত্তেজনা ও সহিংসতা আরও বাড়াচ্ছে এবং মানবিক সংকট আরও গভীর হচ্ছে।