শিরোনাম
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শেষ পরিণতি কি পারমাণবিক যুদ্ধের মধ্য দিয়েই? আদৌ কি পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার হতে পারে এই যুদ্ধে? সম্প্রতি বেলারুশে রাশিয়ার কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্রের প্রথম ধাপ স্থাপনের পর এমন প্রশ্ন জোরালো হচ্ছে বিশ্বজুড়ে।
তবে এ যুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার হবে- এমন বিশ্বাস করতে নারাজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক ড. শাহিদুজ্জামান।
তিনি মনে করেন, ‘যুদ্ধের বিস্তৃতি বাড়লেও পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার হবে না এখানে। কৌশলগত শব্দটি দিয়েই নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টাই করা হবে।’
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এক ফোরামে বেলারুশে তাদের কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্রের প্রথম ধাপ স্থাপন করা হয়েছে জানিয়ে বলেন, ‘এটি তখনই ব্যবহার করা হবে যখন রাশিয়ার কোনো অঞ্চল বা রাষ্ট্র হুমকিতে পড়বে।’
যদিও রাশিয়ার এই হুমকিকে উড়িয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, রাশিয়ার পক্ষ থেকে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কোনো ইঙ্গিত নেই। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, ‘আমরা এমন কোনো লক্ষণ দেখছি না যে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।’
বেলারুশ রাশিয়ার প্রধান মিত্র। ইউক্রেনে অভিযান শুরুর সময় বেলারুশে পর্যাপ্ত অস্ত্র মোতায়েন করে রাশিয়া। সম্প্রতি পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করা হয়েছে বলেও খবরে এসেছে।
কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মূলত ছোট আকারের ওয়ারহেড বোঝায়। এছাড়া যুদ্ধক্ষেত্রে সীমিতভাবে ব্যবহারের জন্য এক ধরনের ডেলিভারি সিস্টেম যা যুদ্ধক্ষেত্রে ছোট পরিসরে প্রয়োগ করা হয়। এই ওয়ারহেড এমনভাবে তৈরি যা নির্দিষ্ট জায়গায় আঘাত করতে সক্ষম এবং তেজস্ক্রিয়তা কম।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক শাহিদুজ্জামান বলেন, ‘রাশিয়া তার নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। এই যুদ্ধে ব্যাপক ব্যয় হলেও গোটা পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে লড়ছে রাশিয়া এবং যুদ্ধের ফলাফল তার পক্ষেই। এখন যে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি দিচ্ছে, সেটাও যুদ্ধের অংশ এবং যুদ্ধটা নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখার স্বার্থে।’
‘রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘোষণাটি শুনেছি এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়ার খবর পর্যবেক্ষণ করছি। তার এ ঘোষণায় তেমন কোনো ঝুঁকি আছে বলে মনে হয়নি।’
ইউক্রেনের পাল্টা হামলা মজবুত হচ্ছে এবং ব্যাপক অস্ত্র মোতায়েন করছে। এতে রাশিয়ার অবস্থান আরও বেপরোয়া হতে পারে কি না? জবাবে এই বিশ্লেষক বলেন, ‘রাশিয়া মূলত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ঘোষণা দিয়ে যুদ্ধকে প্রশমিত করার চেষ্টা করছে। এরপরেও যদি যুদ্ধের পরিধি বাড়ে তবু পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের আশঙ্কা নেই। এই অস্ত্র ব্যবহারের হুমকিই এক প্রকার যুদ্ধ।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিণতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘এই যুদ্ধে দুই পরাশক্তির অস্তিত্বের লড়াই অনেকটা। যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি অবস্থান নিয়েছে। এ কারণে সহজেই এর শেষ পরিণতি নিয়ে মতামত দেওয়ার সুযোগ নেই। আরও সময় নিতে হবে এর শেষ দেখার জন্য।