শিরোনাম
নিজেদের তৈরি করা প্রথম হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘ফাত্তাহ’ উন্মোচন করেছে ইরান। মঙ্গলবার (৬ জুন) সকালে তেহরানে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও একাধিক ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তার উপস্থিতিতে আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্রটি উন্মোচন করে ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি।
জানা যায়, আইআরজিসির অ্যারোস্পেস ফোর্স এ ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে। বাহিনীটির দাবি, এটির পাল্লা হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ কিলোমিটার (৮৭০ মাইল) ও এটি সব ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করতে সক্ষম।
আইআজিসি বলছে, এ ক্ষেপণাস্ত্র শব্দের চেয়ে ১৪ গুণ বেশি দ্রুত ছুটতে পারে ও ঘণ্টায় প্রায় ১৫ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সক্ষম। এ গতিই হলো ফাত্তাহ’র অন্যতম প্রধান ক্ষমতা। কঠিন জ্বালানির মাধ্যমে তৈরি এ ক্ষেপণাস্ত্র বায়ুমণ্ডলের ভেতরে ও বাইরে দিয়ে যেকোনো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।
এখন পর্যন্ত হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন করা দেশগুলো হলো- রাশিয়া, চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়া। এ ক্ষেপণাস্ত্র শব্দের গতির তুলনায় পাঁচগুণ বা তার চেয়েও বেশি গতিতে চলতে পারে। ফলে কোনো আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও রাডারের জন্য এটিকে শনাক্ত করা একপ্রকার দুঃসাধ্যই বলা চলে।
আইআরজিসি অ্যারোস্পেসের প্রধান আমির আলী হাজিজাদেহ ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির জনক হিসেবে পরিচিত হাসান তেহরানি মোগাদ্দামের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গত বছরের নভেম্বরে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে নিজেদের ব্যাপক সাফল্যের তথ্য প্রকাশ করেন।
সেসময় হাজিজাদেহ বলেছিলেন, আমাদের নতুন ক্ষেপণাস্ত্রটি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিতে একটি ‘প্রজন্মগত লাফ’। এটি বায়ুমণ্ডলের ভেতরে ও বাইরে কৌশলগত চলাচল করতে পারে ও যেকোনো ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করতে পারে।
এদিকে, পশ্চিমা দেশগুলো ও ইসরায়েল বরাবরই ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এসেছে। তাদের দাবি, ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পারমাণবিক ওয়ারহেড বহনের জন্য ব্যবহার করা হতে পারে। তবে তেহরান এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
আইআরজিসি গত মাসে সফলভাবে দুই হাজার কিলোমিটার (১ হাজার ২৪০ মাইল) পাল্লার একটি নতুন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালায়। বিষয়টি নিয়ে পশ্চিমা মোড়লরা ব্যাপক সমালোচনা করেছেন। ফ্রান্স বলেছে, এর মাধ্যমে ইরান ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি ও জাতিসংঘের প্রস্তাব লঙ্ঘন করেছে।
সূত্র: আল জাজিরা