পশ্চিমবঙ্গে অবৈধ আতশবাজি কারখানায় বিস্ফোরণ, নিহত ৭

ফানাম নিউজ
  ১৭ মে ২০২৩, ০২:২৪

পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠলো পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর। মঙ্গলবার (১৬ মে) স্থানীয় একটি অবৈধ আতশবাজি কারখানায় বিস্ফোরণে অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও সাতজন। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এরই মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এগরা থানার পুলিশ। দমকলকর্মী এবং বোম্ব স্কোয়াডের সদস্যদেরও ডাকা হয়েছে।

অভিযোগ, এদিন পূর্ব মেদিনীপুরের এক নম্বর ব্লকের সাহারা গ্ৰাম পঞ্চায়েতের এলাকায় একটি বাজি কারখানায় অবৈধভাবে আতশবাজি তৈরি করা হচ্ছিল। হঠাৎ বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা গ্ৰাম। আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করেন এলাকাবাসী। পরে জানতে পারেন, গ্ৰামের ভেতরে একটি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটেছে।

বিস্ফোরণের ভয়াবহতা এত বেশি ছিল যে, মরদেহগুলো বাজি কারখানার পাশে প্রায় ১০০ মিটার দূরে থাকা পুকুরে ছিটকে পড়ে।

এসময় এগরা থানার পুলিশ আসার আগেই উদ্ধারকাজ শুরু করে গ্ৰামের লোকজন। আহতদের উদ্ধার করে এগরা সুপার স্পেশালিস্ট হাসপাতালে পাঠানো হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা কৃষ্ণপদ বাগের বাড়িতে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে জানা গেছে। কৃষ্ণ এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা হিসেবে পরিচিত।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, উড়িষ্যার সীমান্ত লাগোয়া এই এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরে অনেক বাড়িতেই অবৈধভাবে বাজি তৈরি চলছিল।

তাদের দাবি, শুধু বাজির বিস্ফোরণ হলে এত ভয়াবহ অবস্থা হতো না। নিশ্চয়ই বাজির নামে ওই বেআইনি কারখানায় অন্য কিছু তৈরি করা হচ্ছিল। পুলিশকে একাধিকবার অভিযোগ জানিও কোনো কাজ হয়নি। এ ঘটনার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে তাদের ঘিরে বিক্ষোভ করে গ্রামবাসী।

ঘটনার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী বলেছেন, এগরার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। যে লোক বেআইনি বাজির কারখানা চালাতো, তাকে পুলিশ ২০২২ সালে গ্ৰেফতার করেছিল। তাকে কোর্টে চালান করা হয়। পরে সে জামিন পেয়ে যায়।

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, জায়গাটা উড়িষ্যার সীমান্ত এলাকা। সেখানে লুকিয়ে ঘর তৈরি করে বেআইনি বাজি তৈরি করে। সেই বাজি উড়িষ্যায় পাঠায়। কোর্ট থেকে জামিন পেয়ে আবার কয়েকদিন হলো বেআইনিভাবে শুরু করেছে এগুলো। স্থানীয় ছেলে-মেয়ে কাজ করে এসব বেআইনি বাজি কারখানা। যেহেতু স্থানীয়রাই ওখানে কাজ করে, তাই সব দোষ গিয়ে পড়ে তাদের ওপর। ওই কারখানার মালিক উড়িষ্যায় পালিয়েছে।

এ বিষয়ে আরও তদন্ত করতে এবং কোথায় কোথায় বেআইনি বাজি কারখানা রয়েছে তার খোঁজ করে আইনি ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়া, বাজি কারখানায় নিহতদের আড়াই লাখ রুপি এবং আহতদের এক লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।