শিরোনাম
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটনের চায়নাটাউন এলাকায় ‘চীনের গোপন পুলিশ স্টেশন’ পরিচালনা করার অভিযোগে নিউইয়র্কে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা হলেন- লু জিয়ানওয়াং (৬১) ও চেন জিনপিং (৫৯)। তারা উভয়ই নিউইয়র্ক শহরের বাসিন্দা। সোমবার (১৭ এপ্রিল) ব্রুকলিনের ফেডারেল প্রসিকিউটর এসব তথ্য প্রকাশ করে।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা চীন সরকারের সঙ্গে যোগসাজশ করে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী চক্রান্ত করছিলেন ও চীনের এজেন্ট হিসেবে কাজ করছিলেন। ব্রুকলিনের ফেডারেল আদালতের প্রসিকিউটর বলেন, নিউইয়র্ক শহর থেকে চীন সরকার গোপনে পুলিশি থানা চালাচ্ছে। বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ ছাড়া আর কিছু নয়। বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
প্রসিকিউটর আরও বলেন, গ্রেফতার হওয়া একজন চীনা নাগরিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো, তিনি চীন থেকে পলাতক এক ব্যক্তিকে ভয় দেখিয়ে আবার নিজ দেশে পাঠানোর চেষ্টা করেছিল। চীন সরকার গ্রেফতার দুই ব্যক্তিতে ২০২২ সালে ক্যালিফোর্নিয়ায় একজনকে চিহ্নিত করার নির্দেশও দিয়েছিল। পালিয়ে আসা ওই ব্যক্তি গণতন্ত্রপন্থি বলে মনে করে চীন।
জার্মান বার্তা সংস্থা ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জিজ্ঞাসাবাদের মুখে গ্রেফতার দু’জনই স্বীকার করেছেন যে, তাদের বিরুদ্ধে এফবিআইয়ের তদন্ত শুরু হয়েছে জানতে পেরে তারা নিজেদের যোগাযোগমাধ্যম থেকে চীন সরকারের ওই নির্দেশ মুছে দেন।
জানা যায়, অভিযোগ প্রমাণিত হলে উভয় ব্যক্তির ২৫ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। মার্কিন বিচার বিভাগ বলছে, গ্রেফতারকৃত লু ও চেন চীনের জননিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের পক্ষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম বিদেশি পুলিশ স্টেশন প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করেছিলেন। ২০২২ সালে জড়িতরা স্টেশনে এফবিআই তদন্ত সম্পর্কে সচেতন হওয়ার পর সেটি বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
বলে ধারণা করছে এফবিআইয়ের ধারণা, কানাডা, যুক্তরাজ্য ও নেদারল্যান্ডসসহ বিশ্বের ৫৩টি দেশে কমপক্ষে ১০০টি এরকম স্টেশন রয়েছে। গত মাসে, কানাডার ফেডারেল বাহিনী কানাডায় পরিচালিত ‘কথিত চীনা পুলিশ স্টেশন’ থেকে হুমকি পায়। সেসময় কানাডিয়ান ফেডারেল বাহিনী এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক অভিযোগ জানানোর আহ্বান জানিয়েছিল।
যদিও আগে থেকেই চীন এসব স্টেশনগুলোকে বিদেশি নাগরিকদের জন্য ‘পরিষেবা কেন্দ্র’ বলে দাবি করে আসছে ও যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এদিকে, মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর দাবি, বিদেশে চীনা নাগরিকদের হুমকি দেওয়া ও নজরদারিতে রাখার জন্য এসব গোপন পুলিশ স্টেশন ব্যবহার করা হচ্ছে।