শিরোনাম
পূর্ব সিরিয়ার ইরানপন্থী স্থাপনাগুলোতে মার্কিন বিমান হামলায় অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজন সিরীয় সেনা, ১১ জন সরকারপন্থি মিলিশিয়া ও পাঁচজন সিরিয়ার সরকারপন্থি বিদেশি যোদ্ধা।
শনিবার (২৫ মার্চ) এসব তথ্য জানায় সিরিয়ার যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী গোষ্ঠী ‘সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইট (এসওএইচআর)। সংস্থাটি বলছে, কয়েক বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানপন্থী সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে এত বড় পাল্টা-পাল্টি হামলা ঘটেনি।
তবে এসওএইচআর প্রধান রামি আব্দেল রহমান নিহত বিদেশি যোদ্ধাদের জাতীয়তা নির্দিষ্ট করে জানাতে পারেননি। অন্যদিকে, বার্তা সংস্থা রয়টার্সও নিহতের সংখ্যা সঠিকভাবে যাচাই করতে পারেনি।
এসওএইচআর বলছে, সিরিয়ায় ক্রমেই ইরানের প্রভাব বাড়তে থাকায় প্রভাবে উদ্বিগ্ন ইসরায়েল। এমন পরিস্থিতিতে ইসরায়েল প্রায়ই সিরিয়ার তেহরানপন্থি গোষ্ঠীগুলোর স্থাপনায় বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালেও, যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের হামলা বেশ বিরল।
বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় হাসাকা শহরের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনীর ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা করা হয়। তাতে এক মার্কিন ঠিকাদার নিহত ও পাঁচ মার্কিন সেনাসহ ছয়জন আহত হন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, সেদিন তিনটি ড্রোন দিয়ে হামলা চালানো হলেও, দুটি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করা হয়। কিন্তু বাকি একটি মার্কিন সৈন্যদের ঘাঁটিতে আঘাত হানে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দাবি, হামলায় ব্যবহৃত ড্রোনগুলোর উৎস ইরান।
এর প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার রাতেই মার্কিন এফ-১৫ জঙ্গি বিমানগুলো ইরানের ইসলামিক রেভোলুশনারি গার্ডস কোর (আইআরজিসি) সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ব্যবহৃত স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালায়। পরে এ তথ্য নিশ্চিত করে পেন্টাগন।
শুক্রবার (২৪ মার্চ) সকালে সিরিয়ার আল ওমর তেলক্ষেত্রের কাছে একটি মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা হয়, এতে আরেক মার্কিন সেনা আহত হন বলে জানায় পেন্টাগন। এর জবাবে সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলের আরও কয়েকটি এলাকায় রকেট হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র।
শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইরানকে হুঁশিয়ার করে বলেন, মার্কিন নাগরিকদের রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র আরও শক্তিশালী উদ্যোগ নিতে পারে।
সিরিয়ায় ১২ বছর ধরে চলা যুদ্ধে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ ইরানের কাছ থেকে বড় ধরনের সমর্থন পেয়ে আসছেন। লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী ও তেহরানপন্থি ইরাকি গোষ্ঠীগুলোসহ ইরানের ছায়া বাহিনীগুলো সিরিয়ার পূর্বাঞ্চল, দক্ষিণাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলে ও রাজধানী দামেস্কের আশেপাশের বিশাল এলাকায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ইরানের ড্রোন কর্মসূচী নিয়ে বারবার সতর্কতা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান জেনারেল এরিক কুরিলা বলেন, ইরানের হাতে এখন ওই অঞ্চলের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক অত্যাধুনিক মানুষবিহীন আকাশযান রয়েছে। তাদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত।