শিরোনাম
সপ্তাহে একদিন পর্যটকদের জন্য বন্ধ থাকবে সুন্দরবনের দরজা। তবে এ নিয়ম বলবৎ থাকবে সুন্দরবনের ভারতীয় অংশে। শুধু সুন্দরবন নয়, পশ্চিমবঙ্গের টাইগার রিজার্ভ বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প ও জিপসি সাফারিও সপ্তাহে একদিন বন্ধ থাকবে। আগে সপ্তাহে সাতদিনই খোলা ছিল। সম্প্রতি এতে আপত্তি জানায় ভারতের কেন্দ্রীয় বাঘ সংরক্ষণ সংস্থা ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটি। এরপর একদিন বন্ধ রাখার নির্দেশনা এলো।
ওই সংস্থাটি পশ্চিমবঙ্গের বন দপ্তরকে চিঠি দিয়ে জানায়, দেশের সব ব্যাঘ্র প্রকল্পের মতো বক্সা ও সুন্দরবনের ব্যাঘ্র প্রকল্প এলাকায় সপ্তাহে একদিন ‘মঙ্গলবার’ পর্যটকদের সব ধরনের আনাগোনা বন্ধ রাখতে হবে। বন্ধ থাকবে জিপসি সাফারিও।
ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটির ওই নির্দেশ পেয়েই বিজ্ঞপ্তি জারি করেন রাজ্যের বন্যপ্রাণ শাখার প্রধান মুখ্য বনপাল দেবল রায়।
বিজ্ঞপ্তিতে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প ও বক্সায় প্রতি মঙ্গলবার পর্যটকদের প্রবেশ বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন তিনি। আগামী ১ এপ্রিল থেকে এ নতুন নির্দেশনা কার্যকর হবে। তবে এতদিন কেন সুন্দরবন ও বক্সা টাইগার রিজার্ভ ওই নিয়মের বাইরে ছিল তা নিয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারেননি রাজ্যের বন কর্মকর্তারা।
বনপাল দেবল রায় বলেন, সপ্তাহে একদিন মঙ্গলবার জঙ্গলে শুধু পর্যটকদের প্রবেশ নিষেধ। জঙ্গলে পর্যটকদের আনাগোনা বন্ধ থাকলেও জঙ্গলের ভেতরে থাকা বাসিন্দারা স্বাভাবিকভাবে যাতায়াত করতে পারবেন। জঙ্গলের ভেতরে যেসব মানুষের বাস, তাদের জন্য এই নিয়ম বলবৎ হবে না। এছাড়া ওয়াচ টাওয়ারের রক্ষণাবেক্ষণ এবং বন দপ্তরের অন্যান্য কাজও চালু থাকবে মঙ্গলবার। ফলে আপাতত পরিষেবার জন্য উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই।
এদিকে, এ নির্দেশনা জারিতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সুন্দরবন ও বক্সার পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, মৌসুমে এক মাসের বেশি সময় জঙ্গলে পর্যটকদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা হয়, বন্ধ রাখা হয় গভীর জঙ্গলে পর্যটকদের সাফারি। তার ওপর সপ্তাহে একদিন আর্থিক কর্মকাণ্ড থমকে গেলে বড় প্রভাব পড়বে টাইগার রিজার্ভ কেন্দ্রিক মানুষের জীবন-যাপনে।
সুন্দরবনের হোটেল ব্যবসায়ী তারক দাস বলেন, এ নির্দেশনায় খুশি নন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। ব্যাংকের লোন নিয়ে আমরা ব্যবসা করছি। এতে ব্যবসায় প্রভাব পড়ার আশঙ্কা তৈরি হলো। এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন।
তবে সুন্দরবনের অন্য হোটেল ব্যবসায়ী জয়ন্ত হালদার বলেন, দেশের অন্যান্য জায়গায় যখন এই নিয়ম চালু রয়েছে, তখন সপ্তাহে একদিন জঙ্গল বন্ধ থাকলে তেমন কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের পরিচালক অপূর্ব সেন বলেন, বন্যপ্রাণীরা যেন সপ্তাহের একদিন মানুষের কোলাহল থেকে দূরে নিজেদের মতো করে থাকতে পারে, তার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।