শিরোনাম
কলকাতা শহরের ৮৯, এলিয়ট রোড। এখানে এলেই চোখে পড়বে রেস্তোরাঁ ‘সুরুচি’। যে কেউ শহরের এই রেস্তোরাঁয় খাবার খেলে, নিশ্চয়ই মনে হবে ঘরে বসে খাঁটি বাঙালির খাবার খাচ্ছেন।
রেস্তোরাঁটি সবার নজর কাড়ে যে কারণে তা হলো বাজার-সদাই থেকে শুরু করে উনুন জ্বালানো, এমনকি পরিবেশন সব কাজ করেন নারীরাই।
সুরুচি রেস্তোরাঁটির জন্মের আগে এখানে অন্নপূর্ণা মিষ্টান্ন ভাণ্ডার ছিল। ১৯৫২ সালে এই রেস্তোরাঁ চালু হয়। এই বাঙালি রেস্তোরাঁর খাবারের পরিবেশনও ভিন্ন।
রেস্তোরাঁ পরিচালনা করে অল বেঙ্গল উইমেন্স ইউনিয়ন। দেশভাগের পর বঞ্চিত নারীদের পুনর্বাসনের জন্য প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থা।
সুরুচি শুধু দুপুরে খাবারের জন্য উন্মুক্ত। বাঙালির পছন্দের করাইসুটির কচুরীর সঙ্গে কখনো ছোলার ডাল, আবার আলুর দম। কেউ যদি ডাল পুরি চায় সেটাও পাওয়া যায় এখানে।
পাশাপাশি মাছে-ভাতে বাঙালির ইলিশ ভাপা, সঙ্গে ইলিশের মাথা দিয়ে কচুশাঁক, সঙ্গে যদি চান একটু কলার মোচা ঘণ্ট বা মোচা চিংড়ি সেও পেয়ে যাবেন।
আরও আছে ভেটকি মাছের পাতুরি, সরসে পার্সে, পটলের দোরমা, চিতল মাছের পেটি বা চিতল মাছের মুইঠা, বাঙালির সব রকমের সুস্বাদু খাবার। ভাত-ডাল, মাছের ঝোলতো সব সময়ই খাওয়া হয়, একটু স্বাদ বদলে খাসি কিংবা মুরগির মাংসের ঝোল সেও পাওয়া যায় এখানে। কাঁকড়া বা চিংড়িও রান্না হয় এখানে।
রেস্তোরাঁটিতে ১৫ বছর ধরে কাজ করছেন পাপিয়া চৌধুরী। তিনি জানান, আমাদের প্রতিষ্ঠানটি ১৯৫২ সালে শুরু হয়। তখন এখানে অন্নপূর্ণা মিষ্টান্ন ভাণ্ডার ছিল। তারপর ধীরে ধীরে এটার অগ্রগতি হয়। দেশভাগের সময় কলকাতায় বাংলাদেশ থেকে অনেকেই সেখানে পাড়ি জমান। অল বেঙ্গল উইমেন্স ইউনিয়ন ম্যানেজমেন্টে যারা ছিলেন তারা সেই নারীদের নিয়ে এই প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু করেন। ধীরে ধীরে এই প্রতিষ্ঠানটির উন্নতি হয়, পরবর্তী সময়ে ১৯৭২ কিংবা ১৯৭৩ সালে এই প্রতিষ্ঠানটির নাম হয় সুরুচি।
তিনি বলেন, আগে আমাদের এই রেস্তোরাঁয় ৩৬ জন ছিল। কিন্তু লকডাউনের পর কমে এখন আমরা ১৩ জন এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত আছি। আগে এখানে খাবার খাওয়ার জন্য লোক লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতো।
রেস্তোরাঁটি সকাল ১০টায় খোলা হয়। এরপর বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
পাপিয়া চৌধুরী আরও বলেন, আমাদের এই প্রতিষ্ঠানে বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে আসা পর্যটকরা বেশি খেতে আসেন। তাছাড়া পূর্ব ভারতের পর্যটকরা ছাড়াও মেঘালয়, আসাম, শিলং,নেপাল, ভুটান, থেকেও বাঙালি খাবার খেতে আসেন অনেকে।