ইউক্রেনে প্রতিশোধের হামলা

ফানাম নিউজ
  ১১ মার্চ ২০২৩, ১৪:০৩

ফের রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে কাঁপল ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ বেশ কয়েকটি অঞ্চল। বৃহস্পতিবার ভোরে অন্তত ৮১টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে রুশ বাহিনী। এতে ১১ বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। এসব এলাকায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বিদ্যুৎ।

জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এর নিরাপত্তা নিয়ে কড়া সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। অবশ্য, বিকেল নাগাদ কেন্দ্রটিতে বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরায় দিতে সক্ষম হন অপারেটররা।

অন্তত ১০টি অঞ্চলে হামলা করা হয়েছে জানিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, হামলা করে ভয় দেখানো যাবে না, এর দায় এড়াতে পারে না মস্কো। আর এটিকে ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী রাশিয়ার অঞ্চল ব্রায়ানস্কে হামলার বড় প্রতিশোধ বলে স্বীকার করেছে মস্কো। খবর বিবিসি ও আলজাজিরার।

ভয়াবহ ওই হামলায় পশ্চিম ইউক্রেনীয় শহর লভিভে পাঁচজন, দক্ষিণাঞ্চলীয় খেরসনে তিনজন, রাজধানী কিয়েভে দু’জন এবং দিনিপ্রোতে একজন নিহত নিহত হন। দেশটির প্রেসিডেন্টের চিফ অব স্টাফ আন্দ্রি ইয়ারমাক টেলিগ্রামে লিখেছেন, রুশ সন্ত্রাসীরা খেরসনের একটি বাস স্টপেজে হামলা চালিয়েছে।

জেলেনস্কি বলেছেন, ১০টি অঞ্চলের অবকাঠামো এবং আবাসিক ভবনগুলোতে হামলা চালানো হয়েছে। টেলিগ্রামে তিনি লিখেছেন, দখলকারীরা কেবল বেসামরিক মানুষকে ভয় দেখাতে পারে। এসব করে তাদের লাভ হবে না। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় স্বীকার করেছে, তাদের বাহিনী ইউক্রেনের অবকাঠামোতে বড় প্রতিশোধমূলক হামলা চালিয়েছে।

গত সপ্তাহে ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী রাশিয়ার ব্রায়ানস্ক অঞ্চলে হামলায় একজন নিহত ও একাধিক লোক আহত হন। যাকে ‘সন্ত্রাসী’ হামলা বলে অভিহিত করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর প্রতিশোধ নিতেই গতকাল হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চলায় মস্কো।

ভয়াবহ হামলার পর জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পুরোপুরি বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। ফলে জেনারেটর দিয়ে পরিস্থিত সামাল দেওয়ার চেষ্টা চালায় কর্তৃপক্ষ। জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানিয়েছে, চুল্লির জ্বালানি অতিরিক্ত গরম হয়ে গলে যাওয়া রোধ করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলানো হয়। এই পরিস্থিতি আর চলতে পারে না বলে কড়া সতর্ক করেছেন সংস্থার প্রধান রাফায়েল গ্রসি।

তিনি বলেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে ভাগ্য হয়তো একদিন আর সহায় হবে না। বিপর্যয় নেমেই আসবে। ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর দাবি, ৮১টি ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে ৩৪টি গুলি করে রুখতে সক্ষম হয় তাঁরা। এ ছাড়া আটটি ড্রোনও ভূপাতিত করা হয়।
এদিকে, কিয়েভে আরও ১০টি লেপার্ড ২ ট্যাঙ্ক পাঠিয়েছে পোল্যান্ড। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী মারিউস ব্লাসজ্যাক এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ক্রেমলিন বলেছে, কৃষ্ণসাগরের শস্য চুক্তি নিয়ে এখনও অনেক প্রশ্ন রয়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠকের কোনো পরিকল্পনা নেই। ইউক্রেনীয় বন্দরগুলো থেকে নিরাপদে শস্য রপ্তানি করার অনুমতির দ্বিতীয় দফা মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১৮ মার্চ। কিন্তু রাশিয়া রাজি না হলে বন্ধ হয়ে যাবে শস্য রপ্তানি। চুক্তির নানা বিষয় নিয়ে সন্তুষ্ট নয় বলে এরই মধ্যে ইঙ্গিতও দিয়েছে মস্কো।

এদিকে, ইউক্রেনে মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান পাঠানোর বিষয়ে স্লোভাকিয়াকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে মনে করেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী জারোস্লাভ নাদ। তিনি জানান, এ নিয়ে পোল্যান্ড সহযোগিতা করতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।