শিরোনাম
২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিবেক রামাস্বামী। প্রযুক্তি উদ্যোক্তা, অধিকারকর্মী ও বিনিয়োগকারী এ ব্যক্তি আগামী নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের হয়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে নামতে চান। তার এ ঘোষণা এরই মধ্যে মার্কিন রাজনীতিতে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজের একটি শোতে অংশ নিয়ে ২০২৪ সালের নির্বাচনে প্রার্থীতার লড়াইয়ে নামার ঘোষণা দেন বিবেক (৩৭)। মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) এই অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হয়। প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে চান। পাশাপাশি কমাতে চান চীনের ওপর নির্ভরশীলতা।
ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিবেক বলেন, আমরা সবাই যুক্তরাষ্ট্রকে শীর্ষে দেখতে চাই। তবে আমাদের বুঝতে হবে, যুক্তরাষ্ট্র আসলে কী। আমি যুক্তরাষ্ট্রের সমাজে মেধার সংস্কৃতি ও চর্চা পুনরুদ্ধার করতে চাই। মার্কিন চেতনাকে পুনরুজ্জীবিত করতে চাই।
চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব বিস্তারকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হুমকি মনে করেন বিবেক। তার মতে, এটাই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির প্রধান চ্যালেঞ্জ। তাই ক্ষমতায় গেলে পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়নের সময় চীনের প্রভাব থেকে দেশকে মুক্ত করার বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পশ্চিম ওহাইওতে বেড়ে ওঠা বিবেকের মা-বাবা ভারতের কেরালার বাসিন্দা ছিলেন। 'দ্য নিউ ইয়র্কারে'র প্রতিবেদন অনুযায়ী, তার বাবা ইঞ্জিনিয়ার ও জেনারেল ইলেকট্রিকের পেটেন্ট অ্যাটর্নি ছিলেন। মা ছিলেন একজন জেরিয়াট্রিক সাইকিয়াট্রিস্ট।
পলিটিকো’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, ছোটবেলা থেকেই দারুণ মেধাবী ও পড়ুয়া ছিলেন বিবেক রামাস্বামী। মার্কিন মুলুকের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়, ইয়েল থেকে আইন বিষয়ে পড়ালেখা করেন। আরও অবাক করার মতো বিষয় হলো, এর আগে তিনি আরও এক হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জীববিজ্ঞানে স্নাতক করেন।
২০১৪ সালে বিবেক ফার্মাসিউটিক্যাল রিসার্চ ফার্ম ‘রয়ভ্যান্ট সায়েন্সেস’ স্থাপন করেন। বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধকের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করে এই প্রতিষ্ঠান। এ সংস্থাটিই তার জীবন বদলে দেয়। কোটি-কোটি টাকার ব্যবসা দাঁড় করান তিনি।
তাছাড়া ‘স্ট্রাইভ’ নামের একটি সম্পদ নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যান হিসেব চাকরিও করছেন বিবেক। সংস্থাটি ব্যবসায়ীদের রাজনৈতিক ও সামাজিক সমস্যা এড়িয়ে চলতে সাহায্য করে।
২০১৬ সালের ফোর্বস প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিবেক রামাস্বামীর মোট সম্পদের মূল্য ৬০ কোটি ডলার। অর্থাৎ বেশিরভাগ রিপাবলিকান প্রার্থীর মতো তিনিও একজন ধনকুবের।
তাছাড়া তিনি পরিবেশ, সামাজিক ও শাসনব্যবস্থায় সরকারি নজরদারির বিরোধী। তার বদলে তিনি সামাজিক জাগরণ ও বিপুল ব্যবসায়িক বিনিয়োগে বিশ্বাসী। বিবেকের দাবি, রিপাবলিকান নীতি মেনেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুর্বল পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন তিনি। তার বিশ্বাস, সমাজ-সংস্কৃতির থেকে মুনাফা ও উদ্ভাবনে অধিক অগ্রাধিকার দেওয়া দরকার।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দল থেকে প্রার্থীতার লড়াইয়ে নামার ঘোষণা দিয়েছেন আরেক ভারতীয় বংশোদ্ভূত নিক্কি হ্যালি। তিনি দক্ষিণ ক্যারোলাইনার দুবারের গর্ভনর ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে জাতিসংঘে মার্কিন দূত হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন।
এদিকে, ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী হিসেবে লড়তে চান সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। তাছাড়া রিপাবলিকান দলের প্রার্থী হিসেবে ফ্লোরিডার গর্ভনর রন ডিস্যান্টিস, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স, সাউথ ক্যারোলাইনার সিনেটর টিম স্কটের নামও শোনা যাচ্ছে। সব মিলিয়ে রিপাবলিকান নেতাদের জন্য আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বেশ প্রতিযোগিতামূলক হতে চলেছে।