শিরোনাম
চার বছর পর আনুষ্ঠানিকভাবে নিরাপত্তা সংলাপে বসেছে চীন ও জাপান। জানা যায়, সম্প্রতি টোকিওর সামরিক কর্মসূচি নিয়ে উদ্বিগ্ন বেইজিং। অন্যদিকে রাশিয়া-চীনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও নজরদারি বেলুনের ব্যবহার নিয়ে উদ্বিগ্ন জাপান।
এসব বিষয় নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনা কমাতেই বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুই দেশের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়।
জানা যায়, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ দেখে চীনও একইভাবে তাইওয়ানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। আর এ বিষয়টি নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন জাপান। কারণ, এটি টোকিও-ওয়াশিংটনের সঙ্গে চীনের যে বৈরী সম্পর্ক তা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে ও বিশ্ব বাণিজ্যে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
গত বছরের ডিসেম্বরে জাপানের পক্ষ থেকে বলা হয়, আগামী পাঁচ বছরে দেশটি প্রতিরক্ষা ব্যয় দ্বিগুণ করে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২ শতাংশ করবে। সে হিসাবে জাপান প্রতিরক্ষাখাতে মোট ৩২ হাজার কোটি ডলার ব্যয় করবে।
তাছাড়া, চীনের মূল ভূখন্ডে আঘাত হানার সক্ষমতাসম্পন্ন দীর্ঘপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে টোকিও। এমনকি, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় অন্যান্য যুদ্ধাস্ত্র মজুত করতে পারে জাপান। এসবই করা হবে চীনকে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত রাখতে।
অন্যদিক, বেইজিং গত বছর তার প্রতিরক্ষা ব্যয় ৭ দশমিক ১ শতাংশ বাড়িয়েছে। তাছাড়া সশস্ত্র বাহিনীর জন্য দেশটি যা জাপানের তুলনায় চারগুণ বেশি অর্থ খরচ করেছে।
জানা যায়, আলোচনার শুরুতেই চীনের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী সান ওয়েইডং জাপানের পরিবর্তিত নিরাপত্তা কর্মসূচি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি ব্যাপক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গেছে। সেই সঙ্গে আমরা স্নায়ু যুদ্ধ শুরু করার মানসিকতা দেখতে পাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের বাইরের শক্তির পৃষ্ঠপোষকতায় তাইওয়ানের বিষয়ে জাপান যে ‘নেতিবাচক পদক্ষেপ’ নিয়েছে, তা নিয়েই পুরোপুরি সতর্ক চীন।
জাপানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী শিজিও ইয়ামাদা পূর্ব চীন সাগরে নিজেদের সেনকাকু ও চীনের দিয়াওয়ু দ্বীপ নিয়ে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে চলমান আঞ্চলিক বিরোধ নিয়ে উদ্বেগ তুলে ধরেন। তাছাড়া তিনি রাশিয়া-চীনের যৌথ সামরিক মহড়া ও ২০১৯ সাল অন্তত তিনবার জাপানের আকাশে সন্দেহভাজন চীনা নজরদারি বেলুন ওড়ানোর বিষয় উত্থাপন করেন।
ইয়ামাদা সানকে বলেন, জাপান-চীনের মধ্যে সম্পর্ক ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও, দুটি দেশই অনেক সমস্যা ও উদ্বেগের সম্মুখীন হচ্ছে। এদিকে, গুপ্তচর বেলুনের বিষয়ে জাপানের দাবিকে অস্বীকার করেছে চীন। চীনের দাবি, জাপানের এ দাবি সম্পূর্ণ ‘ভিত্তিহীন’।
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে বেইজিংয়ে চীন ও জাপানের মধ্যে সর্বশেষ নিরাপত্তা সংলাপ হয়েছিল।
সূত্র: আল-জাজিরা