শিরোনাম
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর এবং ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছরপূর্তি স্মরণ করে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের করিডোরে লাগানো হলো ‘বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী ফলক’।
বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) ফলকটির উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস।
অনুষ্ঠানে আরও অংশ নেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান (এইচওডি) ইমন কল্যাণ লাহিড়ী, অধ্যাপক ওম প্রকাশ মিশ্র, মিশনের প্রথম সচিব (প্রেস) রঞ্জন সেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য অধ্যাপক এবং শিক্ষার্থীরা।
পরে দুই দেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। সেই সঙ্গে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন উপস্থিত সবাই।
আন্দালিব ইলিয়াস বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর, ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর এবং দুই দেশের বন্ধুত্বের অর্ধশতক পূরণ হয়েছে। সেটিকে কেন্দ্র করেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রীর ওপর এই ফলক লাগানো হয়েছে। আজকে ফলকটি উন্মোচন হলো। এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া এবং তাতে আমাদের শামিল করায় কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের কাছে গভীরভাবে কৃতজ্ঞ।
তিনি আরও বলেন, দুই দেশ, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কেবল ইতিহাস বা রাজনীতির ওপর ভিত্তি করে নয়। তার মূলে রয়েছে দুই দেশের সংস্কৃতি, দু’দেশের মানুষের মনন, হৃদয়ের বন্ধন। তাছাড়া রাজনীতিতে দুই দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে, সেটাও বড় ভূমিকা পালন করে। ভবিষ্যতে একসঙ্গে আরও ভালো কাজ করার বিষয়ে আমরা আশাবাদী।
ঐতিহ্যবাহী যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু নামাঙ্কিত চেয়ার প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে উপ-হাইকমিশনার জানান, এ বিষয়ে আমরা গভীরভাবে কাজ করছি। উপাচার্যের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগতভাবে একাধিকবার কথা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গেও কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, দু’দেশেরই সদিচ্ছা রয়েছে। আমরা খুবই আশাবাদী যে, এ ব্যাপারে তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করতে পারবো।
বঙ্গবন্ধু চেয়ার হয়ে গেলেই বাংলাদেশ থেকে কোনো শিক্ষাবিদ এখানে আসবেন, গবেষণা করবেন এবং বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ক্লাস নেবেন বলেও জানান তিনি।
ইমন কল্যাণ লাহিড়ী বলেন, আমরা মনে করি, বঙ্গবন্ধুকে গঙ্গার পাড়ে কিংবা পদ্মার পাড়ে আটকে রাখা যায় না। বঙ্গবন্ধু হলেন প্রথম ব্যক্তি, যিনি বাংলাকে জাতিসংঘে তুলে ধরেছিলেন। আমাদের মনে হয়, তার জীবনী শিক্ষার্থীদের বেশি করে পড়া দরকার। তার যে ধর্মনিরপেক্ষতা, বাঙালি হিসেবে আমাদের অহংকার করা উচিত। দেশভাগের যে বেদনা আমাদের মধ্যে ছিল, সেখানে বঙ্গবন্ধুর ধারণা দিয়ে আমরা আরাম খুঁজে পাই। আবার মনে হয়, বঙ্গবন্ধুকে যদি নতুন করে নতুন প্রজন্ম জানে, আমাদের বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাতে অনেক বেশি উপকৃত হবে।
তিনি জানান, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ-ভিত্তিক একটি বিশেষ কাগজ রয়েছে, যেটি স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের পড়ানো হয়। এছাড়া আমাদের পাঠ্যসূচিতেও যেন বঙ্গবন্ধুকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারি, তা নিয়ে কথাবার্তা চলছে।