শিরোনাম
ক্লোনিংয়ের মাধ্যমে উন্নত জাতের ও প্রচুর পরিমাণে দুধ দিতে সক্ষম এমন তিনটি গরুর বাছুর জন্ম দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন চীনের বিজ্ঞানীরা। ক্লোনিংয়ে দারুণ এ সফলতা চীনের ডেইরিশিল্পকে অভাবনীয় অর্জন এনে দেবে বলে দাবি করছেন প্রকল্পের সঙ্গে জড়িতরা। মূলত বিদেশ থেকে আমদানি করা গরুর ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে চীনা বিজ্ঞানীরা এ কাজ করেছেন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন বিজনেসের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চীনের নিংজিয়া অঞ্চলে নতুন বর্ষবরণ উৎসবের আগে বাছুরগুলোর জন্ম হয়। নর্থওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি অব এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড ফরেস্ট্রি সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির বিজ্ঞানীরা ক্লোনিংয়ের এ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
যে তিনটি বাছুরের জন্ম হয়েছে, সেগুলো নেদারল্যান্ডসের হলেস্টেইন ফ্রিজিয়ান জাত থেকে ক্লোন করা। ফ্রিজিয়ান জাতের গরু অন্যান্য যেকোনো জাতের চেয়ে বেশি দুধ দেয়।
বিজ্ঞানীরা বলেন, উন্নত প্রজাতির এ গাভী বাচ্চা জন্ম দেওয়ার পর বছরে ১৮ টন দুধ ও জীবদ্দশায় প্রায় ১০০ টন দুধ দিতে পারবে। যা যুক্তরাষ্ট্রে ২০২১ সালে গড়ে একটি গাভীর দেওয়া দুধের চেয়ে ১ দশমিক ৭ গুণ বেশি। এ দুগ্ধোৎপাদন ক্ষমতা থাকায় এ জাতের গরুকে বলা হচ্ছে সুপার কাউ।
নিংজিয়ার উলিন শহরের এক কর্মকর্তা বলেন, ক্লোন করা বাছুরগুলোর মধ্যে প্রথমটির জন্ম হয় গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর। স্বাভাবিক বাছুরের তুলনায় আকারে বড় হওয়ায় সিজারিয়ান সেকশনের মাধ্যমে এটির জন্ম দেওয়া হয়। বাছুরটির ওজন ছিল ৫৬.৭ কেজি।
চীনা সংবাদমাধ্যম সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ডেইলি জানায়, ক্লোনিংয়ের জন্য বিজ্ঞানীরা আগে থেকে বাছাই করা গরুর কানের কোষ থেকে ১২০টি ক্লোন ভ্রুণ তৈরি করেন। এরপর সেগুলো অন্য আরেকটি গুরুর জরায়ুতে প্রতিস্থাপন করা হয়।
ক্লোনিং প্রকল্পের প্রধান বিজ্ঞানী জিন ইয়াপিং এটিকে চীনের জন্য বিরাট অর্জন হিসেবে দেখছেন। তার মতে, এখন থেকে চীন সবচেয়ে ভালো গরুর জাত লালন-পালন ও সরক্ষণের সুযোগ পাবে।
জিন ইয়াপিং আরও বলেন, চীনে প্রতি ১০ হাজার গরুর মধ্যে মাত্র পাঁচটি জীবদ্দশায় ১০০ টন দুধ দিতে পারে। কিন্তু উচ্চ উৎপাদনশীল জাত চিহ্নিত না হলে এ ধরনের উন্নত জাতের গরুর বংশবৃদ্ধি নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়।
গ্লোবাল টাইমসকে জিন ইয়াপিং বলেন, চীনে দুধ উৎপাদনকারী গরুগুলোর ৭০ শতাংশের বেশি বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। বিদেশি দুগ্ধজাত গরুর ওপর চীনের নির্ভরতা কমাতে তারা ক্লোনিংয়ের মাধ্যমে ১ হাজার সুপার কাউয়ের জন্ম দেবেন।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশেই স্থানীয় জাতের গবাদি পশুর সঙ্গে ক্লোনিংয়ের মাধ্যমে উন্নত জাতের পশু জন্ম দেওয়া হচ্ছে। তবে গত কয়েক বছরে চীন এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লাভ করেছে। এসব পশু থেকে বেশি দুধ পাওয়া যায়। তাছাড়া এগুলোর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও অনেক বেশি থাকে।