শিরোনাম
ধোঁকাবাজির অভিযোগ ওঠার পর থেকে আদানি গ্রুপের শেয়ারের দরপতন যেন থামছেই না। গত তিন দিনে সাত হাজার কোটি ডলার হারিয়েছে আদানি গ্রুপ। এর ফলে ব্যক্তিগত সম্পদে ধস নেমেছে গৌতম আদানিরও। ভারতীয় এ ধনকুবের বিশ্বের সর্বোচ্চ ধনীদের তালিকায় তৃতীয় অবস্থান থেকে নেমে গেছেন আট নম্বরে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সোমবার (৩০ জানুয়ারি) আদানি গ্রুপের ফ্ল্যাগশিপ কোম্পানি আদানি এন্টারপ্রাইজেসের শেয়ারের দর ২ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে এবং প্রস্তাবিত দামের চেয়ে অনেকটাই নিচে অবস্থান করছে।
এছাড়া আদানি ট্রান্সমিশন, আদানি টোটাল গ্যাস, আদানি গ্রিন এনার্জি, আদানি পাওয়ার, আদানি উইলমার এবং আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোনের শেয়ারের দরপতন হয়েছে ৪ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশের মধ্যে।
বিনিয়োগকারীদের আস্থা সংকটের মধ্যেই আদানি এন্টারপ্রাইজেসের ২৫০ কোটি ডলারের সেকেন্ডারি শেয়ার বিক্রি দ্বিতীয় দিনে পা দিয়েছে। এদিন কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ার বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৬৮৪ রুপিতে, যা প্রস্তাবিত সর্বনিম্ন দর ৩ হাজার ১১২ রুপির তুলনায় ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ কম।
আদানি গ্রুপের কোম্পানিগুলো শেয়ারবাজারে এভাবে মুখথুবড়ে পড়ার ঘটনা গৌতম আদানির জন্য যথেষ্ট উদ্বেগের বিষয়। গত তিন বছরে তার কিছু শেয়ারের দাম ১ হাজার ৫০০ শতাংশের বেশি বেড়েছিল। ২০২২ সালে এশিয়ার সর্বোচ্চ মুনাফা লগ্নিকারীদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। গত পাঁচ বছরের উত্থানে ইলন মাস্কের টেসলা ইনকরপোরেশনকেও পেছনে ফেলেছে আদানি এন্টারপ্রাইজেস। ধীরে ধীরে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় নিজের অবস্থান পাকা করেছেন গৌতম আদানি।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে কিছু সময়ের জন্য হলেও বিশ্বের শীর্ষ ধনীর তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছিলেন ভারতীয় এ ধনকুবের। ওই সময়ে আদানি ও তার পরিবার নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ১৫ হাজার ৪৭০ কোটি ডলার।
কিন্তু সাম্প্রতিক পতনের ধাক্কায় ১০ হাজার কোটি ডলারের নিচে নেমে গেছে আদানির সম্পদ। সোমবার বিকেলে ফোর্বসের বিলিয়নিয়ার ইনডেক্সে তার সম্পদের পরিমাণ দেখা গেছে ৮ হাজার ৮২০ কোটি ডলার। অর্থাৎ পাঁচ মাসেরও কম সময়ে প্রায় অর্ধেক সম্পদ খুঁইয়েছেন ৬০ বছর বয়সী আদানি।
আদানি গ্রুপের বিষয়ে দুই বছর তদন্তের পর গত ২৪ জানুয়ারি গুরুতর নানা অভিযোগের বিশদ বিবরণসহ একটি বিস্ফোরক প্রতিবেদন প্রকাশ করে হিনডেনবার্গ রিসার্চ। এতে গৌতম আদানির বিরুদ্ধে ‘করপোরেট জগতের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ধোঁকাবাজি’র অভিযোগ তুলেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনিয়োগ গবেষণা সংস্থাটি।
প্রতিক্রিয়ায় আদানি গ্রুপ বলেছে, তারা হিনডেনবার্গের বিরুদ্ধে ‘অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, গবেষণাবিহীন’ প্রতিবেদন প্রকাশের বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেবে।
জবাবে হিনডেনবার্গ অবশ্য বলেছে, তাদের প্রতিবেদন পুরোপুরি সঠিক। এর বিরুদ্ধে যেকোনো আইনি পদক্ষেপ হবে অযৌক্তিক।