মিয়ানমারে আফিম উৎপাদন ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ

ফানাম নিউজ
  ৩১ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:১৯

মিয়ানমারে সবশেষ সামরিক অভ্যুত্থানের পর আফিমের উৎপাদন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে গত নয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। জাতিসংঘের তথ্য বলছে., ২০২১ সালে দেশটিতে আফিমের উৎপাদন ছিল ৪২৩ মেট্রিক টন। কিন্তু ২০২২ সালে তা প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে ৭৯৫ মেট্রিক টনে পৌঁছেছে।

জাতিসংঘের বিশ্বাস, হেরোইন তৈরিতে ব্যবহৃত আফিম রেজিনের মূল্যবৃদ্ধি এবং মিয়ানমারে জনগণের অর্থনৈতিক দুর্দশা ও নিরাপত্তাহীনতাই আফিম উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য দায়ী।

বৈশ্বিক সংস্থাটির মাদক ও অপরাধ বিষয়ক দপ্তর ইউএনওডিসির আঞ্চলিক প্রতিনিধি জেরেমি ডাগলাস বলেছেন, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সেনা অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের অর্থনীতি, নিরাপত্তা ও শাসনব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে। এ অবস্থায় উত্তরাঞ্চলীয় শান প্রদেশ এবং সীমান্তবর্তী প্রত্যন্ত রাজ্যগুলোর সংঘর্ষ-প্রবণ অঞ্চলের কৃষকদের আফিম চাষে ফেরা ছাড়া তেমন কোনো উপায় ছিল না।

মিয়ানমার, থাইল্যান্ড এবং লাওসের সীমানা যেখানে মিলিত হয়েছে, সেটিকে ‘গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল’ বলা হয়। অঞ্চলটি ঐতিহাসিকভাবে আফিম ও হেরোইন উৎপাদনের একটি প্রধান উৎস।

গত বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) প্রকাশিত জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে মিয়ানমারের অর্থনীতি দেশে-বিদেশের নানা চাপের মুখে পড়েছিল। যেমন- রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি। এসব ঘটনা আফিম চাষ বাড়াতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করেছে।

আফগানিস্তানের পর মিয়ানমার হলো বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম আফিম উৎপাদনকারী দেশ। বিশ্বজুড়ে বিক্রি হওয়া সবচেয়ে বেশি হেরোইনের উৎস এশিয়ার এ দুটি দেশ।

জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, মিয়ানমারে উৎপাদিত আফিমের অর্থনৈতিক মূল্য বছরে ২০০ কোটি ডলার। আর পুরো অঞ্চলে হেরোইন ব্যবসার মূল্য প্রায় এক হাজার কোটি ডলার।

কিন্তু গত দশকে বিকল্প শস্য উৎপাদন প্রকল্প ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের কারণে আফিমের গাছ পপি চাষ কমে আসছিল। তবে জাতিসংঘ পরিচালিত বার্ষিক জরিপে দেখা গেছে, মিয়ানমারে আবার আফিম উৎপাদন বেড়েছে। ২০১৩ সালের পর ২০২২ সালেই সর্বোচ্চ ৮৭০ টন আফিম উৎপাদিত হয়েছে।