শিরোনাম
দেড় বছর আগে অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখলকারী মিয়ানমার জান্তা সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য নির্বাচনকে ঘিরে একটি কঠোর নতুন আইন ঘোষণা করেছে। আগস্টের মধ্যে প্রতিশ্রুত নির্বাচনের জন্য নেওয়া প্রাথমিক পদক্ষেপে এই নতুন আইন সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
এই আইনটি ২০১০ সালের আইনের আদলে করা হয়েছে। আইনটিতে দল ও প্রার্থীদের ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ বা ‘বেআইনি’ হিসাবে দেখা ব্যক্তি বা সংস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিষয়টি বিবেচিত হয়।
২০২১ সালে অং সান সুচির নেতৃত্বে বেসামরিক সরকারকে হটানোর পর থেকে দেশটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার অধীনে রয়েছে। আন্তর্জাতিক চাপ কমানোর জন্য মিয়ানমার সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং এ বছরের আগস্টের মধ্যে সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছিলেন।
নির্বাচনী প্রক্রিয়ার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসাবে সামরিক বাহিনী ২০-পৃষ্ঠার একটি আইন জারি করেছে।এতে যেসব রাজনৈতিক দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চায় তাদের জন্য জটিল ও কঠোর নিয়ম নির্ধারণ করা হলো। জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং স্বাক্ষরিত আইনটি শুক্রবার রাষ্ট্রীয় গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমারে প্রকাশিত হয়।
এদিকে, জান্তা সরকারের আদালত সু চিকে ৩৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন সম্প্রতি। সাবেক প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ তার দলের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের জাতীয় রাজনীতি থেকে দূরে রেখে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ছায়া জাতীয় ঐক্য সরকার সু চির সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে জনগণকে ‘ধোঁকাবাজি’ নির্বাচনের বিরোধিতা করার আহ্বান জানিয়েছে।
নির্বাচন ঘনিয়ে আসার আরেক ক্ষণে, জাতীয় প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা পরিষদ আগামী সপ্তাহে বৈঠক করবে বলে জানা গেছে। সেখানে মিন অং হ্লাইং কাউন্সিলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারেন। কেননা সংবিধানের অধীনে জরুরি অবস্থা আর সম্প্রসারণের অনুমতি দেওয়া যাবে না। জরুরি শাসন অবসানের ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক বাহিনী তার নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করার সময় নোবেল জয়ী সু চি গ্রেফতার হন। সে সময় জান্তা সরকার ক্ষমতা দখল করলেও দেশটির সিংহভাগ জনগণ বিষয়টি মেনে নেয়নি। রাস্তায় বিক্ষোভ, সরকারি কাজকর্ম বয়কটসহ সশস্ত্র বিদ্রোহের মাধ্যমে জান্তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করে দেশটির বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। এখনও প্রায় বিদো্রহী গোষ্ঠী ও জান্তা বাহিনীর সদস্যদের লড়াইয়ের খবর পাওয়া যায়।
স্থানীয় মনিটরিং গ্রুপগুলো বলছে, মিয়ানমারে সেনা অভূত্থানের পর সহিংসতায় এ পর্যন্ত ২ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। অভিযান চালিয়ে অনেককে আটক করারও অভিযোগ ওঠে। বহু মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন দেশটির সেনাদের নির্যাতনে। শুধু তাই নয়, সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে মিয়ানমারের অর্থনীতি।
সূত্র: ব্লুমবার্গ