শিরোনাম
সারিন্দা বাদক মঙ্গলাকান্ত রায়ের বয়স ১০২ বছর। শতায়ু পার করে আসা এ মানুষটি সারা জীবন নিজের জাদু ছড়িয়েছেন সারিন্দার মাধ্যমে। দশকের পর দশক বাদ্যযন্ত্রের সুরে মন্ত্রমুগ্ধ করেছেন শ্রোতাদের। তারই স্বীকৃতিস্বরূপ এবার পেলেন পদ্মশ্রী পুরস্কার।
পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রাম আমগুড়ির বাসিন্দা মঙ্গলাকান্ত রায়। তিন ছেলে, চার মেয়ে- মোট সাত সন্তান থাকলেও স্ত্রী চম্পা রায়কে নিয়ে আলাদাই থাকেন তিনি। অতিকষ্টে কাটে তাদের দিন। কেউ সেভাবে সাহায্যও করে না।
বাংলাদেশের শিল্পী ধূমাকান্ত রায়ের কাছ থেকে সারিন্দা বাজানোর তালিম নিয়েছিলেন মঙ্গলকান্ত রায়। শিল্পী ধূমাকান্ত রায়ের কাছ থেকেই কিনে নিয়েছিলেন সারিন্দাটা।
২০১৭ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার মঙ্গলাকান্তকে ‘বঙ্গরত্ন’ সম্মানে ভূষিত করেছিল। এবার ৭৪তম প্রজাতন্ত্র দিবসে এ শতবর্ষী বাদ্যযন্ত্র শিল্পীকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করলো ভারত সরকার।
পদ্মশ্রী পেয়ে খুশিতে আত্মহারা মঙ্গলকান্ত রায়। তিনি বলেন, গলা আর আগের মতন সাধে না। তাই গান গেয়ে রোজগারও কঠিন হয়ে গেছে। সারিন্দা বাজিয়ে কিছু উপার্জন করতাম। সেটাও এখন প্রায় বন্ধ। পদ্মশ্রী পুরস্কার পেয়ে আমি ভীষণ খুশি। এখন একটাই ইচ্ছা, কোনোভাবে অসুখ-বিসুখ ছাড়া দিন কাটানো।
এদিন পুরস্কারপ্রাপ্তির আনন্দ প্রকাশের পাশাপাশি সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত থাকার ক্ষোভও উগরে দিয়েছেন মঙ্গলকান্ত রায়। তিনি বলেন, পুরস্কারের খবর সংবাদমাধ্যমে আসার পরেই আমার বাড়িতে সরকারি কর্মকর্তারা আসেন। সবাই ভেবেছিল, আমি খুব বড়লোক। আমার টাকা-পয়সার প্রয়োজন নেই। কিন্তু তেমন কিছু না। সারিন্দা বাজিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে কোনরকমে দিন পার করছি। তবে তথ্য-সংস্কৃতি দপ্তর থেকে বেশ কিছু অর্থ পেয়েছি। এ ছাড়া আর কিছু পাইনি। আমার কাছে সারিন্দা রয়েছে, এতেই আমি খুশি।