শিরোনাম
তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেই পাকিস্তানে ব্যাপক লোডশেডিং বা বিদ্যুৎবিভ্রাট দেখা দিয়েছে। দেশটির জ্বালানি মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডের ফ্রিকোয়েন্সি কমে যাওয়ায় সোমবার (২৩ জানুয়ারি) ভোর থেকে এ বিদ্যুৎবিভ্রাট দেখা দেয়।
জানা যায়, এদিন পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় শহর করাচি, রাজধানী ইসলামাবাদের পাশাপাশি লাহোর ও পেশোয়ারসহ সব বড় শহর বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন ছিল।
এ বিষয়ে দেশটির বিদ্যুৎমন্ত্রী খুররম দস্তগীর জিও নিউজে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, এটি তেমন বড় কোনো বিষয় নয়। শীতকালে এমনিতেই আমাদের দেশে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যায়, তাই অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা রাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখি।
‘তবে, আজ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে যখন সিস্টেমগুলো চালু করা হয়, তখন দেশের দক্ষিণাঞ্চলের দাদু ও জামশোর শহরের কোথাও কোথাও কম্পাঙ্কের তারতম্য ও ভোল্টেজের ওঠানামা চোখে পড়ে। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী ইউনিটগুলো একে একে বন্ধ হয়ে যায়।’
দস্তগীর আরও বলেন, পেশোয়ার ও ইসলামাবাদে গ্রিড স্টেশন পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু হয়েছে। ১২ ঘন্টার মধ্যে সারাদেশের বিদ্যুৎব্যবস্থা পুরোপুরি পুনরুদ্ধার করা হবে বলে জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাই।
অর্থনৈতিক সংকট শুরু হওয়ার পর থেকেই পাকিস্তান প্রায়ই বিদ্যুৎবিভ্রাটের শিকার হয়ে আসছে, যার জন্য অব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামোতে বিনিয়োগের অভাবকে দায়ী করা হয়।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, পাকিস্তানের অনেকেই এখন দীর্ঘ সময়ের লোডশেডিংয় অভ্যস্ত হয়ে গেছেন। তাছাড়া ব্যবসা-শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও অধিকাংশ বাড়িতে জেনারেটরের মাধ্যমে সৃষ্ট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।
খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের রাজধানী পেশোয়ারের লেডি রিডিং নামক হাসপাতালের কর্মকর্তারা বলেন, বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় আমাদের তেমন গুরুতর বিপাকে পড়তে হয় না। কারণ, জরুরি ওয়ার্ড ও নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটসহ (আইসিইউ) প্রতিটি বিভাগে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য জেনারেটর রয়েছে।
এদিকে, সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষের দাবি, বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থা যাতে পুরোপুরি ব্যাহত না হয়, সেজন্য কিছু এলাকায় সাময়িকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হয়। চলতি মাসের শুরুর দিকেই পাকিস্তান সরকারের নতুন শক্তি সঞ্চয় পরিকল্পনায় দেশের সব শপিংমল ও রেস্তোঁরাগুলো রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তাছাড়া সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিদ্যুতের ব্যবহার ৩০ শতাংশ কমাতে বলা হয়েছে। মন্ত্রিসভা বলেছে, নতুন ওই পরিকল্পনা দেশটিকে প্রায় ছয় হাজার ২০০ কোটি পাকিস্তানি রুপি বাঁচাতে সাহায্য করবে।
পাকিস্তান সাধারণত আমদানি করা জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করে বেশিরভাগ বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে। গত বছর আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশটির বৈদেশিক রিজার্ভের ওপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি হয়েছে।