শুরু হলো রাশিয়া-বেলারুশের যৌথ সামরিক মহড়া

ফানাম নিউজ
  ১৭ জানুয়ারি ২০২৩, ০১:৩৭

রাশিয়া-বেলারুশের যৌথ সামরিক মহড়া শুরু হয়েছে। সোমবার (১৬ জানুয়ারি) এ মহড়া শুরু হয়। বেলারুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সম্প্রতি ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বারবার দাবি করা হচ্ছিল, বেলারুশকে যুদ্ধে অংশ নিতে প্ররোচিত করছে রাশিয়া। এর মধ্যেই এ যৌথ সামরিক মহড়া ওই আশঙ্কাকে আরও বাড়িয়ে দিলো। তবে মিনস্ক বলছে, এ মহড়া প্রতিরক্ষামূলক ও তারা এখনো যুদ্ধে অংশ নেওয়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।

ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশ দুটি ১৬ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিমান মহড়া চালাবে। এসময় বেলারুশের সবগুলো সামরিক বিমানঘাঁটি ব্যবহার করা হবে।

রোববার (১৫ জানুয়ারি) টেলিগ্রামে পাঠানো এক অডিওবার্তায় বেলারুশিয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, বেলারুশিয়ান নিরাপত্তা পরিষদের প্রথম ডেপুটি স্টেট সেক্রেটারি পাভেল মুরাভেইকো বলেছেন, আমরা ধৈর্য্য ধরে আছি ও আমাদের অস্ত্রগুলো প্রস্তুত রাখছি।

মুরাভেইকো আরও বলেন, ইউক্রেনের সঙ্গে আমাদের দক্ষিণ সীমান্তের পরিস্থিতি খুব একটা শান্ত নয়। তাছাড়া কিয়েভ তার সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বেলারুশকে উসকানি দিচ্ছে। আমরা ইউক্রেনের যেকোনো উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য প্রস্তুত আছি।

ইউক্রেন ক্রমাগত বেলারুশ থেকে সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে সতর্ক করেছে এবং রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি গত সপ্তাহে বলেছিলেন যে দেশটিকে অবশ্যই বেলারুশের সাথে তার সীমান্তে প্রস্তুত থাকতে হবে।

এর আগে ১১ জানুয়ারি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আরও বলেন, বড় বড় কথা ছাড়া বেলারুশের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কিছু দেখা যায়নি। এরপরও আমাদের সৈন্যদের বেলারুশ সীমান্ত ও তৎসংলগ্ন এলাকাগুলোতে সতর্ক অবস্থানে থাকতে হবে।

এর আগে গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বেলারুশ সফরে যান। সেখানে তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে বৈঠক করেন। তারপর থেকেই বেলারুশ সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করতে শুরু করে ইউক্রেন।

সেসময় ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ইয়েভেন ইয়েনিন বলেছিলেন, পুতিনের বেলারুশ সফরের পর আমাদের আশঙ্কা বেলারুশ সীমান্ত দিয়ে ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে রাশিয়ান সেনারা। তাই আমরা সীমান্ত এলাকায় সেনা ও অস্ত্রের মজুত বৃদ্ধি করছি।

কিয়েভ আরও দাবি করে, ইউক্রেনে কথিত বিশেষ সামরিক অভিযানে আরও বেশি সম্পৃক্ত হতে বেলারুশকে চাপ দিচ্ছে পুতিন প্রশাসন। তবে এমন অভিযোগ শক্তভাবে অস্বীকার করে আসছে মস্কো ও মিনস্ক।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বেলারুশের ভূখন্ড ব্যবহার করে ইউক্রেনে ঢোকে রুশ সেনারা। এমনকি, গত অক্টোবর থেকে বেলারুশে যৌথ সামরিক মহড়ার জন্য সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া।

ওই সময় থেকে দুই দেশ সামরিক সহযোগিতা জোরদার করতেও সম্মত হয়েছে। উত্তরের দিক থেকে ইউক্রেইনে নতুন করে হামলা চালানোর জন্য রাশিয়া তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্রদেশ বেলারুশের ভূখন্ড ব্যবহার করতে পারে বলে শঙ্কা বাড়ছে।

যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই বেলারুশ নিজে ও রাশিয়ার সঙ্গে অসংখ্য যৌথ সামরিক মহড়া চালিয়েছে। রোববার (১৫ জানুয়ারি) টেলিগ্রামের অনানুষ্ঠানিক মিলিটারি চ্যানেগুলো জানায়, এ বছরের শুরু থেকেই বেলারুশে যুদ্ধবিমান ও সামরিক পরিবহন আসতে শুরু করেছে।

ওই টেলিগ্রাম চ্যানেলগুলোর দাবি, শুধু রোববার (১৫ জানুয়ারি) রাশিয়া থেকে আটটি যুদ্ধ ও চারটি কার্গো প্লেন বেলারুশে প্রবেশ করেছে। যদিও রয়টারর্স এসব তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে সক্ষম হয়নি।