শিরোনাম
প্রাকৃতিক দুর্যাগে ধ্বংস হয়ে যাওয়া ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের তেজস্ক্রিয় পানি শোধন করে সমুদ্রে নিষ্কাশন করবে জাপান। এ বছর প্রায় ১০ লাখ টন তেজস্ক্রিয় পানি সমুদ্রে ছাড়া হবে বলে জানায় জাপান কর্তৃপক্ষ।
সম্প্রতি জাপানের শীর্ষ পর্যায়ের মন্ত্রী হিরোকাজু মাতসুনো বলেন, আমরা এ বছরের বসন্ত কিংবা গ্রীষ্মে শোধিত পানি সমুদ্রে ছাড়তে পারি। তবে তার আগে জাপান সরকার আইএইএ থেকে চূড়ান্ত একটি প্রতিবেদন আসার অপেক্ষায় রয়েছে।
আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থাও (আইএইএ) শোধিত এ পানি সাগরে ছাড়লে সামুদ্রিক জগতের কোনো ক্ষতি হবে না উল্লেখ করে প্রস্তাবটির অনুমোদন দিয়েছে। তবে প্রতিবেশী দেশগুলো এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
তাছাড়া স্থানীয় জেলে সম্প্রদায় এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে। তাদের আশঙ্কা, এতে মানুষ ওই অঞ্চলের সামুদ্রিক খাবারের ওপর আস্থা হারাবে।
ফুকুশিমা বিদ্যুৎকেন্দ্রটির পরিচালনা কোম্পানি টেপকোর দাবি, শোধনের পর পানিতে তেজস্ক্রিয় কণার মাত্রা একেবারেই কমে যায়, যা জাতীয় মানদণ্ড অনুযায়ী ঠিক আছে। আর বিপুল পরিমাণ এ পানি শোধন করে সাগরে ছাড়তে প্রায় চার দশক সময় লেড়ে যাবে।
কোম্পানিটি আরও জানায়, তেজস্ক্রিয় কণার মাত্র কমে গেলেও, ওই পানিতে ট্রিটিয়ামের মাত্রা এখনও জাতীয় নিরাপদ মানদণ্ডের ওপরে আছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রিটিয়াম পানি থেকে আলাদা করা খুব কঠিন ও এর মাত্রা বেশি থাকলে মানুষের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
জাপান সরকার প্রথম ২০২১ সালে ফুকুশিমার তেজস্ক্রিয় পানি সমুদ্রে ছাড়ার বিষয়টি অনুমোদন করে। সেসময় বলা হয়েছিল, ১০ লাখ টন তেজস্ক্রিয় পানি শোধন করে পর্যায়ক্রমে সাগরে ফেলা হবে।
পারমাণবিক চুল্লি ঠান্ডা রাখতে ব্যবহৃত তেজস্ক্রিয় পানি প্রতিদিনই শোধিত হয়ে ট্যাংকে জমা হচ্ছে। সাগরে ফেলার আগে এ পানিতে থাকা তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের বেশিরভাগই দূর করা হয়েছে।
২০১১ সালের ১১ মার্চ ভয়াবহ ভূমিকম্প ও এ থেকে সৃষ্ট সুনামির ফলে ফুকুশিমার ওই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সুনামির পানিতে কেন্দ্রটির চারটি পারমাণবিক চুল্লি প্লাবিত হয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।
এ ঘটনাকে ইউক্রেইনের চেরনোবিল পারমাণবিক দুর্ঘটনার সঙ্গে তুলনা করা হয়। দুটি বিপর্যয়েই প্রকৃতি ও জীবজগত মারাত্মভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুটি দুর্ঘটনার আশেপাশের এলাকা থেকে লাখো মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়।