তৎকালীন প্রেসিডেন্টকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ আদালতের

ফানাম নিউজ
  ১৫ জানুয়ারি ২০২৩, ০২:৩০

শ্রীলঙ্কায় ২০১৯ সালের আলোচিত ইস্টার সানডে বোমা হামলা প্রতিরোধে ব্যর্থতার জন্য তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ও সরকারের শীর্ষস্থানীয় চার কর্মকর্তাকে দায়ী করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। আগেই বিশ্বাসযোগ্য তথ্য থাকা সত্ত্বেও শত শত প্রাণহানি আটকাতে তারা ব্যর্থ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন লঙ্কান সুপ্রিম কোর্ট। এ কারণে তাদের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে বোমা হামলায় ভুক্তভোগীদের মোটা অংকের ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। খবর সিএনএনের।

শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে অন্যতম কালো দিন ২০১৯ সালের ২১ এপ্রিল। সেদিন খ্রিস্টানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ইস্টার সানডে চলাকালে দেশটিতে গির্জা, বিলাসবহুল হোটেলসহ একাধিক স্থাপনায় ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারান অন্তত ২৯০ জন। আহত হন আরও কয়েকশ।

হামলার পরপরই তৎকালীন লঙ্কান সরকার স্বীকার করে, ভারত-যুক্তরাষ্ট্রসহ নিজস্ব গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাছ থেকে একাধিকবার সতর্কবার্তা পাওয়া সত্ত্বেও হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে তারা। হামলাকারীদের সঙ্গে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের সরাসরি যোগসূত্র ছিল বলে বিশ্বাস করেন শ্রীলঙ্কার গোয়েন্দারা।

তবে আগে থেকে তথ্য পাওয়া সত্ত্বেও প্রাণঘাতী এই হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ার পেছনে তৎকালীন লঙ্কান প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা এবং সরকারের চার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার দায়িত্বে অবহেলাকে দায়ী করেছেন লঙ্কান সুপ্রিম কোর্ট।

তামিল গার্ডিয়ানের খবর অনুসারে, লঙ্কান সর্বোচ্চ আদালতের সাত বিচারপতির একটি বেঞ্চ আদেশ দিয়েছেন, হামলায় ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে নিজের পকেট থেকে ১০ কোটি লঙ্কান রুপি (২ লাখ ৭৩ হাজার ৩০০ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি ‍মুদ্রায় প্রায় ২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা) ক্ষতিপূরণ দিতে হবে সিরিসেনাকে।

এছাড়া তৎকালীন আইজিপি পুজিত জয়সুন্দরা ও স্টেট ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসের (এসআইএস) পরিচালক নীলান্ত জয়াবর্ধনে প্রত্যেকে সাড়ে সাত কোটি রুপি ক্ষতিপূরণ দেবেন। আর তৎকালীন প্রতিরক্ষা সচিব হেমাসিরি ফার্নান্দোকে পাঁচ কোটি এবং তৎকালীন জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক সিসিরা মেন্ডিসের পকেট থেকে এক কোটি লঙ্কান রুপি ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আদালত আরও বলেছেন, ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণের অর্থ কম দেওয়া বা না দেওয়ার অভিযোগ তদন্তে ক্ষতিপূরণ অফিসে একটি তহবিল গঠন করতে হবে। এছাড়া, দায়িত্বপালনে ব্যর্থতার জন্য সাবেক গোয়েন্দা প্রধান নীলান্ত জয়াবর্ধনের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যে বর্তমান সরকারকে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

ইস্টার সানডে হামলায় জড়িত অভিযোগে গ্রেফতার ২৫ জনের বিচারকাজ গত বছর স্থগিত করা হয়েছিল। এ বিষয়ে এখনো লঙ্কান আদালতের রায় পাওয়া যায়নি।