শিরোনাম
ঘণ্টা দুয়েক পরেই মালাবদল, শুরু হবে নতুন জীবন। অথচ এমন মুহূর্তে বিয়ের মণ্ডপ বাদ দিয়ে কনের গাড়ি ছুটলো অন্য গন্তব্যে। না, কোনো বিউটি পার্লারে নয়, তার গন্তব্য ছিল হাসপাতালে। সেখানে বিয়ের মেহেদি লাগানো হাতে উঠলো ছুরি, কাঁচি, ফরসেপ। নিজে নতুন জীবনে প্রবেশের আগে রোগীকেও নতুন জীবন দিয়ে গেলেন সার্জন প্রিয়াঙ্কা সাহা!
সম্প্রতি চমকপ্রদ এ ঘটনা ঘটে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। বিয়ে রেখে অস্ত্রোপচারে নামা চিকিৎসককে প্রশংসার জোয়ারে ভাসাচ্ছেন সবাই।
জানা যায়, কলকাতার রানিকুঠি লায়ন্স হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন যন্ত্রশিল্পী অর্ণব মুখোপাধ্যায়। বছর চল্লিশের এ ব্যক্তির পেটে ছিল বিশালাকার এক টিউমার। এ সমস্যা নিয়ে প্রথমে চিকিৎসক দীপঙ্কর সরকারের কাছে যান অর্ণব। প্রকাণ্ড ওই টিউমার পেট কেটে বের করা সহজ ছিল না। এ কারণে দীপঙ্কর সরকার অর্ণবকে রেফার করেন এসএসকেএম হাসপাতালের অস্ত্রোপচার বিভাগের সাবেক প্রধান ডা. মাখনলাল সাহার কাছে। তার মেয়ে প্রিয়াঙ্কাও পেশায় সার্জন।
অস্ত্রোপচারের আগে রোগীর কাউন্সেলিং হয়। তিনি রাজি হতেই শুরু হয় প্রস্তুতি। বাবা ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচারে নামছেন শুনে মেয়ে আবদার করে বসেন, এতে সাহায্য করবেন তিনিও।
ডা. মাখনলাল মেয়েকে বলেন, তোমায় আসতে হবে না। কিন্তু নাছোড়বান্দা প্রিয়াঙ্কাকে আটকানো যায়নি। হোক বিয়ের আগ মুহূর্ত, চিকিৎসকের কাছে রোগীর প্রাণরক্ষাই সবার আগে!
পরে দীর্ঘ অস্ত্রোপচার শেষে অর্ণবের পেট কেটে বের করা হয় প্রায় ১০ কেজি ওজনের টিউমার। অস্ত্রোপচার শেষ হতেই কনের গাড়ি আবার ছোটে মণ্ডপের দিকে। সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয় বিয়ের অনুষ্ঠান। রোগীর জীবন বাঁচিয়ে তবেই নতুন জীবনে পা রাখেন দক্ষিণ কলকাতার ডা. প্রিয়াঙ্কা।
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন