শিরোনাম
এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে আশেপাশের সমুদ্র ও আকাশসীমায় সামরিক মহড়া চালানোয় চীনের প্রতি নিন্দা জানিয়েছে তাইওয়ান। সোমবার (৯ জানুয়ারি) তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তারা দ্বীপের চারপাশে ৫৭টি চীনা বিমান সনাক্ত করেছে।
তাইওয়ানের রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ভিত্তিহীন অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে চীন যে মহড়া চালিয়েছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। তাইওয়ান প্রণালী ও এর আশপাশের অঞ্চলের শান্তি-স্থিতিশীলতা রক্ষা করা তাইওয়ান-চীন উভয়েরই দায়িত্ব।
‘তাইওয়ানের অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট। আমরা কোনোভাবেই বিরোধ বাড়াবো না বা উস্কে দেবো না। তবে সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষায় দৃঢ় ও সতর্ক অবস্থানে থাকবে স্বায়ত্তশাসিত এ অঞ্চল।
এদিকে, চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড বলেন, তার বাহিনী তাইওয়ানের আশেপাশে সমুদ্র ও আকাশসীমায় প্রকৃত যুদ্ধের আদলে মহড়া চালিয়েছে।
এ মহড়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল, চীনের সামরিক ক্ষমতার জানান দেওয়া এবং বহিরাগত শক্তি ও তাইওয়ানের বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডগুলো দৃঢ়ভাবে মোকাবিলা করা।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘন্টায় দ্বীপটির চারপাশে ৫৭টি চীনা বিমান ও চারটি নৌযান শনাক্ত করেছে তারা। বিমানগুলোর মধ্যে ২৮টি তাইওয়ানের বিমান প্রতিরক্ষা অঞ্চল দিয়ে উড়ে যায়।
এমনকি, ওই ২৮টি বিমানের মধ্যে কোনো কোনোটি তাইওয়ান প্রণালীর মধ্যরেখা অতিক্রম করে, যার মধ্যে ছিল এসইউ-৩০ ও জে-১৬ ফাইটার প্লেন। তাছাড়া দ্বীপটির দক্ষিণ দিক দিয়ে পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম এইচ-৬ নামের আরও দুটি বোমারু বিমান উড়ে যায়।
গত বছরের ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকেও তাইওয়ানের চারপাশে একই রকমের মহড়া চালায় চীন। সেসময় তাইওয়ান দাবি করে, ৪৩টি চীনা যুদ্ধবিমান মধ্যরেখা অতিক্রম করে।
২০২২ সালে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সফর কেন্দ্র করে তাইওয়ান ইস্যুতে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। চীনের হুমকি ও কঠোর হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে পেলোসি তাইওয়ান সফর করেন। এতে ভেঙে যায় ওই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা।
গত কয়েক দশকের রীতি ভেঙে কোনো উচ্চ পর্যায়ের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা তাইওয়ান সফর করেন। পেলোসি তাইওয়ান ছাড়ার পরপরই কয়েকদিন ধরেই তাইওয়ানের চারপাশে নজিরবিহীন সামরিক মহড়া চালায় চীন। এমনকি, দ্বীপটির চতুর্দিকে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করাসহ যুদ্ধ জাহাজ ও বিমান পাঠায় শি জিনপিং প্রশাসন।
তাইওয়ানের ওপর চীনের সার্বভৌমত্ব মানতে নারাজ যুক্তরাষ্ট্র, আবার তাইওয়ানকে স্বাধীন দেশ হিসেবেও স্বীকৃতি দেয় না মার্কিন কর্তৃপক্ষ। তাইওয়ানকে অস্ত্র সরবরাহ করা সত্ত্বেও চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের।
সূত্র: রয়টার্স