শিরোনাম
শীতকালীন তুষারঝড়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মৃতের সংখ্যা এরই মধ্যে অর্ধশত ছাড়িয়েছে। বিপদ এড়াতে বাসিন্দাদের ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে, বিভিন্ন স্থানে জারি করা হয়েছে জরুরি অবস্থা। এমন ভয়ংকর দশায় আর যা-ই হোক, অন্তত বাইরে খেলাধুলা চলতে পারে না। আর তাই তেমন কাজও ছিল না মার্কিন ক্রীড়া সাংবাদিক মার্ক উডলির। কিন্তু অফিসের সেটা ভালো লাগেনি হয়তো। এ কারণে ভোররাতে ডেকে তুলে কনকনে ঠান্ডায় রাস্তায় দাঁড় করিয়ে আবহাওয়ার হালহকিকত জানতে চাওয়া হয় মার্কের কাছে। অর্থাৎ, তুষারঝড়ের কারণে ক্রীড়া সাংবাদিক থেকে সোজা আবহাওয়া বিটের সাংবাদিক বানিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাকে।
এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে মার্ক উডলির সেই অনুষ্ঠানের ভিডিও। জানা যায়, তিনি মূলত মার্কিন সম্প্রচার নেটওয়ার্ক এনবিসির অধীনস্থ আইওয়া-ভিত্তিক আঞ্চলিক টেলিভিশন চ্যানেল কেডব্লিুউডব্লিউএলের ক্রীড়া বিটের সাংবাদিক। গত সপ্তাহে হঠাৎই তাকে আবহাওয়ার খবরের অনুষ্ঠানে ডাকা হয়। সেখানে মার্কিন অঙ্গরাজ্যটির আবহাওয়া পরিস্থিতির পাশাপাশি নিজের অভিজ্ঞতা জানান মার্ক।
অনুষ্ঠানের ওই অংশটুকুর ভিডিও নিজেই টুইটারে শেয়ার করেছেন তিনি। ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘খেলাধুলার লোককে সকালের শোতে তুষারঝড়ের খবর কভার করতে পাঠালে এমনটিই পাবেন।’
ভিডিওতে দেখা যায় মার্ক বলছেন, ‘আমি সাধারণত খেলাধুলার খবর করি। আগামী কয়েকদিনের জন্য এখানে সব কিছু বাতিল করা হয়েছে। তাই, খেলাধুলার লোককে সাধারণত ঘুম থেকে ওঠার যে সময়, তার চেয়ে পাঁচ ঘণ্টা আগে আসতে বলা, বাতাস, ঠান্ডা ও তুষারপাতের মধ্যে দাঁড়াতে বলা এবং অন্যদের তেমনটি করতে নিষেধ করতে বলার জন্য এর চেয়ে ভালো সময় আর কী হতে পারে?’
এ সাংবাদিক তারপর জানান, তিনি সন্ধ্যার দিকে ৩০ মিনিটের একটি শো করতে অভ্যস্ত এবং সেসময় সাধারণত বাড়ির ভেতরেই থাকেন। কিন্তু এর আগে বুঝতে পারেননি যে, ভোর সাড়ে ৩টায় চ্যানেলটির কোনো মর্নিং শো থাকতে পারে।
মার্ক উডলি বলেন, ‘এটি সত্যিই একটি দীর্ঘ শো। তাই আমাকে ধীরে ধীরে আরও আধপাগল হয়ে উঠতে দেখার জন্য পরবর্তী কয়েক ঘণ্টা টিভির সামনেই থাকুন।’
সরাসরি সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানটিতে তিনি আরও বলেন, ‘এই মুহূর্তে সুসংবাদ হলো, আমি এখনো আমার মুখ অনুভব করতে পারছি। আর দুঃসংবাদ হলো, আমার মনে হচ্ছে, যদি সেটি না পারতাম!’
স্টুডিওর সঙ্গে কথপোকথনের একপর্যায়ে মার্ক জানতে চান, ‘আমি কি আমার নিয়মিত কাজে ফিরে যেতে পারি?’ এরপর তিনি কিছুটা রসিকতা করেই বলেন, ‘আমি মোটামুটি নিশ্চিত, আপনারা এই সময়টাতে একটি অতিরিক্ত ঘণ্টা যোগ করেছেন, যেন আমার মতো কাউকে নির্যাতন করা যায়।’
সবশেষে ‘আজকের সকালে শেষবারের মতো, ওয়াটারলু থেকে সরাসরি’ বলে অনুষ্ঠান থেকে বিদায় নেন মার্ক।
ভিডিওটি শেয়ার হওয়ার পর দ্রুত ভাইরাল হয়। এপর্যন্ত ৩ কোটি ১৫ লাখের বেশিবার সেটি দেখা হয়েছে। পোস্টে মন্তব্য করেছেন ১০ হাজারের বেশি মানুষ। অনেকেই মার্কের দুর্ভোগের জন্য সমবেদনা জানিয়েছেন। চ্যানেল কর্তৃপক্ষকে কটাক্ষও করেছেন কেউ কেউ।
একজন লিখেছেন, ‘মার্ক, আপনি আমাদের কাজগুলো কতটা কঠিন করে দিচ্ছেন সে সম্পর্কে আপনার কোনো ধারণাই নেই। এখন প্রত্যেক সংবাদ পরিচালক ভাইরাল হওয়ার আশায় তাদের ক্রীড়া সাংবাদিককে ঠান্ডার মধ্যে পাঠাতে চাইবেন।’