শিরোনাম
ভারত মহাসাগরে ভাসতে থাকা একটি ট্রলার থেকে ১০৪ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুকে উদ্ধার করেছে শ্রীলঙ্কান নৌবাহিনী। সম্প্রতি দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় উপকূল থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।
শ্রীলঙ্কার উত্তরাঞ্চলীয় উপকূল থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার (৩ দশমিক ৫ নটিক্যাল মাইল) দূরে ট্রলারটিকে ভাসতে দেখেন নৌবাহিনীর সদস্যরা। পরে তারা সেটির কাছে যান।
উদ্ধার করা এসব রোহিঙ্গাদের এরই মধ্যে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরে তাদের আদালতে হাজির করা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন শ্রীলঙ্কান নৌবাহিনীর মুখপাত্র গায়ান বিক্রমাসুরিয়া।
তিনি জানান, এসব রোহিঙ্গার মধ্যে ৩৯ জন নারী ও ২৩ জন শিশু আছে। তাদের মধ্যে ৮০ বছরের এক বৃদ্ধ, একজন নারী ও তার দুই শিশু অসুস্থ থাকায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গা নাগরিকরা বলেন, ট্রলারে করে মিয়ানমারের আরাকানের উপকূল থেকে ইন্দোনেশিয়ার উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন তারা। মাঝপথে ইঞ্জিন বিকল হয়ে গেছে।’
গায়ান বিক্রমাসুরিয়া আরও জানান, ট্রলারের সব যাত্রীকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পুলিশ তাদের আদালতে তোলার পর বিচারকের রায় অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
গত কয়েক বছরে রোহিঙ্গাদের মধ্যে সমুদ্রপথে বিদেশযাত্রার প্রবণতা বেড়েছে। মূলত প্রতিবেশী দেশ ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া যাওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করেন তারা।
এদিকে, অসংখ্য রোহিঙ্গা নাগরিক যাত্রাপথে নৌকাডুবি ও ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাওয়ার মতো দুর্ঘটনায় পড়েছেন। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এমন কয়েকটি নৌযান থেকে শত শত রোহিঙ্গা যাত্রীকে উদ্ধার করেছে বিভিন্ন দেশের নোবাহিনী ও কোস্টগার্ড।
অধিকাংশ রোহিঙ্গার আবাসস্থল মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে। দেশটির সবচেয়ে নিপীড়িত জাতিসত্তা হলো সংখ্যালঘু এ মুসলিম জাতিগোষ্ঠী। এমনকি, তাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতিও কেড়ে নিয়েছে দেশটির জান্তা সরকার।
২০১৭ সালে আরাকানের কয়েকটি পুলিশ স্টেশন ও সেনা ছাউনিতে হামলা চালান সশস্ত্র রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সদস্যরা। তারপর আরাকানের সাধারণ রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যা-ধর্ষণ-অগ্নিসংযোগসহ ভয়াবহ অত্যাচার শুরু করে দেশটির সামরিক বাহিনী।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের নিশ্চিহ্ন করে দিতে পরিকল্পিতভাবেই তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছিল তাতমাদৌ নামে পরিচিতি মিয়ানমার সামরিক বাহিনী।
চরম নিপীড়নের সামনে টিকতে না পেরে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা আরাকান থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।