শিরোনাম
বৈবাহিক সম্পর্কের বাইরে অন্য কারও সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হওয়াকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করে ইন্দোনেশিয়ার সরকার নতুন যে আইন করেছে, তার সমালোচনা করায় জাতিসংঘের এক কর্মকর্তাকে তলব করেছে দেশটির সরকার।
সোমবার (১২ ডিসেম্বর) তাকে তলব করা হয়। কিছুদিন আগে জাতিসংঘের ওই কর্মকর্তা ইন্দোনেশিয়ার নতুন আইনকে নাগরিক স্বাধীনতার জন্য হুমকি বলে মন্তব্য করেছিলেন।
গত সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়ার পার্লামেন্টে ফৌজদারি আইনের সংশোধনী প্রস্তাব পাস হয়। এ আইনে বিয়ের বাইরে যৌনতা ও অবিবাহিত দম্পতিদের একসঙ্গে বসবাস নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
একই আইনে দেশটির প্রেসিডেন্টকে অপমান ও রাষ্ট্রীয় মতাদর্শের বিপরীত মতামত প্রকাশের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এটি ইন্দোনেশীয় নাগরিক ও দেশটিতে বসবাসরত বিদেশি নাগরিক- উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে।
দেশটির কর্মকর্তাদের দাবি, বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হিসেবে ইন্দোনেশীয় মূল্যবোধ ও ইসলামের মর্যাদা সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে নতুন এ আইন করা হয়েছে।
তবে জাতিসংঘ আশঙ্কা প্রকাশ করে, এ আইনের ফলে ইন্দোনেশিয়ায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও মানবাধিকারের অবক্ষয় ঘটতে পারে।
ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তেউকু ফাইজাস্যাহ বলেন, এ মন্তব্যের বিষয়ে মন্ত্রণালয় জাকার্তায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী ভ্যালেরি জুলিয়ান্ডকে তলব করেছে। তার মতে, নতুন আইন নিয়ে ভুল ধারণা প্রকাশের আগে জাতিসংঘের উচিত ছিল সরকারের সঙ্গে কথা বলা।
তেউকু আরও বলেন, আমরা আশা করছি, জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা কোনো বিষয়ে মত প্রকাশের আগে সময় নেবেন, বিষয়টা ভালো করে বুঝবেন। বিশেষ করে যখন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পর্যাপ্ত তথ্য থাকবে না, তখন তাদের উচিত সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করা।
নতুন এ আইনের সমালোচকদের দাবি, এটি দেশের মানুষের স্বাধীনতার ওপর আঘাত হানার সামিল। যদিও এ আইন আগামী তিন বছর কার্যকর হবে না বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের জাকার্তাভিত্তিক গবেষক অ্যান্দ্রিয়াস হারসানো বলেছেন, ইন্দোনেশিয়ায় লাখ লাখ দম্পতি আছেন; যাদের বিয়ের সনদ নেই। বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের আদিবাসী অথবা মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনের মাঝে এ চর্চা বেশি রয়েছে। কারণ তারা নির্দিষ্ট কিছু ধর্মীয় আচারের মাধ্যমে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন।