গুজরাটে বড় জয় পেলেও হিমাচলে হারলো বিজেপি

ফানাম নিউজ
  ০৯ ডিসেম্বর ২০২২, ১৩:৫৮

ভারতের দুই রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল এরই মধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, নিজের রাজ্য অর্থাৎ গুজরাটে নরেন্দ্র মোদীর দল বিজেপি বড় জয় পেয়েছে। তবে হেরেছে হিমাচল প্রদেশে। সেখানে জয় পেয়েছে কংগ্রেস।

প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, গুজরাটে ১৮২ আসনের মধ্যে বিজেপি ১৫৬ আসন পেয়ে বিজয়ী হয়েছে। অন্যদিকে কংগ্রেস সেখানে মাত্র ১৭টি আসন পেয়েছে। তাছাড়া আম আদমি পার্টি পেয়েছে পাঁচ আসন। অন্যান্যদের দখলে গেছে চার আসন।

এদিকে জয়ের পর গুজরাট বাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রমোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

অন্যদিকে হিমাচলের বিধানসভা নির্বাচনে জয় পেয়েছে কংগ্রেস। ৬৮ আসনের মধ্যে দলটি ৪০টিতে জয় পেয়েছে। অন্যদিকে ২৫ আসন পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বিজেপি। আম আদমি পার্টি রাজ্যেটিতে কোনো আসন না পেলেও অন্যান্যরা তিনটিতে জয় পেয়েছে।

ভারতে ক্ষমতায় থাকা বিজেপির আদিভূমি গুজরাট। এখন ঠিকানা দিল্লি হলেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আদিভূমি সেখানে। সেই রাজ্যে বিপুল জয় তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লড়াইয়ে মোদীকে এগিয়ে রাখলো বলেই মনে করছে গেরুয়া শিবির।

এই স্কোরবোর্ড ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের জন্য বিজেপির কাছে বড় ভিত তৈরি করে দিল? এমনটাই প্রশ্ন উঠেছে বৃহস্পতিবার ফল ঘোষণার শুরু থেকে। হিমাচল প্রদেশে সরকার ধরে রাখতে পারেনি বিজেপি। রেওয়াজ মেনে শাসক বদলে নিয়েছে আপেলের রাজ্য। কিন্তু গুজরাটের জয়ে যে আলো, তাতে হিমাচলে হারের আঁধার ঢেকে গিয়েছে। বরং, বিজেপির ধারণা, তৃতীয় বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথ অনেকটাই সহজ করে দিয়েছে গুজরাট।

আগামী বছরেই বেশ কয়েকটি রাজ্যে নির্বাচন রয়েছে। তার জন্যও গুজরাটের ফল অনেকটা অক্সিজেন দিলো মোদী তথা বিজেপিকে।

২০০১ সালে এই গুজরাট থেকেই মোদীর উত্থান। সেখানে ১২ বছর মুখ্যমন্ত্রিত্বের পরে প্রধানমন্ত্রী হন। ২০২১ সালেই প্রশাসক মোদীর ২০ বছর পালন করেছে বিজেপি।

দলের নেতারাও মনে করছেন, বিজেপি নয়, আসলে এই জয় মোদীরই। তাকে সামনে রেখেই যাবতীয় প্রচার হয়েছে। বার বার বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে ফের ভূমিপুত্র নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী দেখতে হলে গুজরাটকে নজির গড়তে হবে। কর্মীদের চাঙ্গা করা থেকে ভোটারদের আর্জি জানানো সব জায়গায় এটাই ছিল বিজেপির মূল স্লোগান।

আর মোদী নিজেও সেটা করেছেন। ১৮২ আসনের গুজরাটে ৩১টি বড় সমাবেশ করেছেন তিনি। যোগ দিয়েছেন তিনটি বড় রোড শো’য়। প্রচারে সময় দেওয়া দেখে স্পষ্টই বোঝা গিয়েছিল, গুজরাটে ভোটকে নিজের লড়াই হিসেবেই দেখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি একা নন। সেনাপতি হিসেবে আরও বেশি সময় দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তারও নিজের রাজ্য গুজরাট। সেখানে দিনের পর দিন ঘাঁটি গেড়ে ছিলেন শাহ। বুথ স্তরের বৈঠকেও তাকে থাকতে দেখা গিয়েছে। আবার প্রচারের খুঁটিনাটিও নিজে দেখেছেন। প্রচার পুস্তিকায় কী লেখা হবে থেকে কোথায় কেন বড় সভা করা দরকার তার হিসাবও তিনিই রেখেছেন।

গুজরাটে ভালো ফল করতে না পারলে যে বাকি দেশে সংগঠন বাড়ানোয় গলার জোর কমে যাবে, সেটা বুঝেই অমিত শাহ প্রথম থেকে কড়া হাতে নিয়েছিলেন নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব। মূলত তিনিই এ বারের ভোট পরিচালনার মূল দায়িত্বে ছিলেন।