সড়ক-রেল প্রকল্প নিয়ে প্রথম গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ

ফানাম নিউজ
  ০৯ ডিসেম্বর ২০২২, ১৩:৪২

পরিকল্পিত সড়ক ও রেল প্রকল্প থেকে মানুষ ও প্রকৃতির সম্ভাব্য ঝুঁকি এবং সুবিধা নিয়ে প্রথমবারের মতো মানসম্মত গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। বিশ্বব্যাপী পরিচালিত সমীক্ষাটিতে উল্লেখ করা হয়, প্রধান সড়ক এবং রেলওয়ে অবকাঠামোর সামগ্রিক পরিকল্পনা করে তৈরি করলে প্রকৃতিকে আরও ভালোভাবে রক্ষা করা সম্ভব। এছাড়া মানুষের জন্য ক্ষতিকর গ্যাস নির্গমন হ্রাস করতে এবং অর্থনৈতিক সুবিধা বাড়াতে পারে।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে কানাডার মন্ট্রিয়ালে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের জীববৈচিত্র্য সম্মেলনে (কপ-১৫) এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

প্রথমবারের মতো এ প্রতিবেদনে পরিকল্পিত পরিবহন অবকাঠামোর, পরিবেশগত ঝুঁকি এবং আর্থ-সামাজিক সুবিধার মানচিত্র তুলে ধরা হয়। জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি (ইউএনইপি), জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের একটি দল, ওয়ার্ল্ড কনজারভেশন মনিটরিং সেন্টার (ডাব্লিউ সিএমসি) দ্বারা এটি পরিচালিত হয়েছে।

গবেষণায় বলা হয়, অভিনব পদ্ধতি এবং ম্যাট্রিক্স ব্যবহার করে গবেষকরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, বড় আকারের পরিবহন অবকাঠামো প্রকল্পগুলো ১৩৭টি দেশে চলমান, কিন্তু পরিকল্পিতভাবে নয়। এসব ক্ষেত্রে বন্যপ্রাণী, জনসংখ্যা, কার্বন সঞ্চয়স্থান এবং নাইট্রোজেন ধরে রাখার ওপর কোনো গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না।

গবেষণাটি পরিকল্পিত সড়ক ও রেল উন্নয়নের জন্য প্রত্যাশিত অর্থনৈতিক সুবিধার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য পরিবেশগত প্রভাবগুলো সম্পর্কে ধারণা দিতে সাহায্য করবে বলে উল্লেখ করা হয়।

গবেষণাপত্রে পরিবেশ বিজ্ঞানীরা অপরিকল্পিত সড়ক ও রেল প্রকল্প থেকে মানুষ এবং প্রকৃতির সম্ভাব্য ঝুঁকি ও অসুবিধার কথা উল্লেখ করেছেন। এ সম্পর্কিত সমীক্ষাটিতে উল্লেখ করা হয়, প্রধান সড়ক এবং রেলওয়ে অবকাঠামোর সামগ্রিক পরিকল্পনা প্রকৃতিকে আরও ভালোভাবে রক্ষা করতে এবং অর্থনৈতিক সুবিধা বাড়াতে পারে।

গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, গত দুই বছরে মহাসড়ক ও রেলপথ নির্মাণের ফলে বিশ্বের সংরক্ষিত এলাকা বা মূল জীববৈচিত্র্য এলাকাগুলোর প্রায় ৬০ হাজার কি.মি. অতিক্রম করেছে। এর ফলে প্রায় ২৫ হাজার পাখি, উভচর এবং স্তন্যপায়ী প্রজাতির আবাসস্থল ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এজন্য বিশ্বব্যাপী গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী কমে যাওয়াার প্রবণতা বেড়েছে।

অপসারণ করা গাছ এবং গাছপালা ৮৮৩ মিলিয়ন টন কার্বন ছেড়েছে। কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত গাছপালা নষ্ট হওয়ার ফলে ১.১১ মিলিয়ন টন নাইট্রোজেন ধারণ করাও বিপণ্ন হবে। গাছপালা ছাড়া অতিরিক্ত নাইট্রোজেন নিম্নধারায় প্রবাহিত পানি বিষাক্ত হতে পারে।

কানাডার মন্ট্রিয়ালের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে সাড়ে ৩টায় বিশ্বব্যাপী জীববৈচিত্র্য রক্ষার (কপ-১৫) সম্মেলন উদ্বোধন করা হয়। এটি উদ্বোধন করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এসময় মন্ট্রিয়ালের সিটি মেয়র ভেলেরি প্ল্যান্টি, চীনের পরিবেশ বিষয়কমন্ত্রী হুয়াং রুনকুই এবং চীনের কুনমিং সিটি মেয়র লিও জিয়াচেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এই সম্মেলনে ১৯৬টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন। সম্মেলন চলবে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত।