কলকাতায় বাংলাদেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী ম্যাক্সনের মৃত্যু

ফানাম নিউজ
  ০১ ডিসেম্বর ২০২২, ০৪:৩৮

বাংলাদেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী ম্যাক্সনের কলকাতায় অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) রাতে হরিদেবপুর থানার অন্তর্গত ১৬৪ নাম্বার মতিলাল গুপ্ত রোডের একটি বহুতল ভবন থেকে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়।

এরপর রাতে কলকাতার সুপার স্পেশালিস্ট হসপিটালে নিয়ে এলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। বুধবার স্থানীয় ফরিদপুর থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। যার কেস নাম্বার১৪১/২২।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক থানার এক কর্মকর্তা জানান, মতিলাল গুপ্তা রোডের ওই বহুতল ভবনের তিন তলা একটি বাসা ভাড়া নিয়ে অর্পিতা হাজরা নামের এক নারীর সঙ্গে থাকতেন ম্যাক্সন।

জানা গেছে, মাদকে আসক্ত ছিলেন তিনি।বেশ কিছুদিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন।

তার বান্ধবী ৩২ বছরের অর্পিতা উত্তর চব্বিশ পরগনার জেলার বরানগরের একটি শপিংমলে (রিলায়েন্স স্মার্ট বাজার) কাজ করতেন। বিভিন্ন সময় তাদের দুই জনের মধ্যে ঝগড়া লেগে থাকতো।

অর্পিতা ওই শপিং মল থেকে বাড়ির উদ্দেশ্য বের হন। ৮টা ৪৮ মিনিট নাগাদ সে হরিদেবপুরের এই বহুতল ভবনে পৌঁছান। এরপর বাইরে থেকে ঘরের দরজা নক করতে থাকেন।

ভেতর থেকে কোনো সাড়া না মেলায় অর্পিতা স্থানীয়দের সহায়তায় ওই দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। ঢুকই দেখতে পান ফ্যানের পাখার সঙ্গে গলায় ওড়না দিয়ে ঝুলছেন ম্যাক্সন।

এরপর ১০টা ১০মিনিট নাগাদ গুরুদেবপুর থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর দেন বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী নামের ওই বহুতলের ভবনের এক বাসিন্দা।

এরপর ঘটনাস্থলে পৌঁছাছে হরিদেবপুর থানার পুলিশ ম্যাক্সনের নিথর দেহ উদ্ধার করে কলকাতার সুপার স্পেশালিস্ট এম আর বাঙুরে হাসপাতাল নিয়ে আসে। পরে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে।

কলকাতার এম আর বাঙুরে হাসপাতালের সুপার ডাক্তার শিশির নস্কর জানান, তাকে থানার পুলিশ মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে। মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।

নুর-উন লতিফ নবী, ওরফে ম্যাক্সন নামে এই ব্যক্তি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার চাঁদগাও থানার এলাকার মোহাম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার পিতার নাম আব্দুল লতিফ চৌধুরী। চলতি বছরে ৪ ফেব্রুয়ারি কলকাতা সংলগ্ন ডানলপ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ।

ফেব্রুয়ারি মাসে ম্যাক্সনকে পশ্চিমবঙ্গের ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতের তোলা হয়। প্রথমে বিচারক১০ দিন রিমান্ডের নির্দেশ দেয়। এরপর বেশ কয়েকবার দফায় দফায় পুলিশের রিমান্ড এবং বিচার বিভাগীয় হেফাজতে নেওয়া হয় ম্যাক্সনকে।

গত ৮ এপ্রিল জামিনে মুক্তি পায় সে। এরপর থেকেই হরিদেবপুরের এই বহুতল ভবনের একটি রুমে তার বান্ধবী অর্পিতার সঙ্গে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন থানায় তার নামে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।