বিনোদন পার্কে আনন্দে মাতোয়ারা তালেবান যোদ্ধারা

ফানাম নিউজ
  ১০ অক্টোবর ২০২১, ১০:৩০

হাতে মেশিনগান নিয়ে অনায়াসে ঘুরে বেড়াচ্ছেন আফগানিস্তানের হালিমিসহ আরও শত শত তালেবান যোদ্ধা। রাজধানী কাবুলের একটি জনপ্রিয় জলাধারের তীরে বিনোদন পার্কে অসাধারণ ছুটির দিন উপভোগ করেন তারা। শুক্রবার (৯ অক্টোবর) বিনোদন পার্কে ঘুরতে দেখা গেছে তাদের। খবর রয়টার্সের।

রাজধানীর কারগা জলাশয়ের বালুকাময় উপকূলে এমন আনন্দ উদযাপনে সামিল হন যারা মাসের পর মাস আফগান যুদ্ধ চালিয়ে গেছেন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের বিরুদ্ধে। গত আগস্টের মাঝামাঝি সময় তালেবান কাবুল নিয়ন্ত্রণের পর থেকে কয়েক সপ্তাহ ধরে নিরাপত্তার দায়িত্বেও ছিলেন যারা তারাও এতে অংশ নেন।

পুরো পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে, মধ্যাঞ্চলীয় ময়দান ওয়ারদাক প্রদেশ থেকে আসা ২৪ বছর বয়সী হালিমি বলছিলেন, আমি খুব আনন্দ উপভোগ করছি কাবুলে এসে এবং প্রথমবারের মতো কারগায় ঘুরতে পেরে। লোকজন আমাকে স্বাগত জানিয়েছে আর আমার সঙ্গীরা ভাইয়ের মতো ব্যবহার করেছে।

পার্কে ঘেরাফেরার সময় অস্ত্রসজ্জিত তালেবান সদস্যরা জলাধারের তীরের খাবারের দোকানগুলো থেকে খাবার কিনে খান এবং চা পান করেন। তাদের কেউ কেউ পার্কের রাইডগুলোতেও চড়েছেন। এসব রাইডের মধ্যে একটি জলদস্যু জাহাজ ও ঘূর্ণায়মান দোলনাও ছিল। ২৫ বছর বয়সী আরেক তালেবান যোদ্ধা জিয়াউল হককে ঘোড়ায় চড়ে চক্কর দিতেও দেখা গেছে।

তালেবান ক্ষমতা দখলের আগে এসব যোদ্ধার অনেকেই কখনও কাবুলে যাননি। তাদের অনেকেই এই পার্কে ঘুরতে আগ্রহী হন।

হালিমি বলেন, যুদ্ধের জন্য আমরা গর্বিত। এখন আমেরিকানরা চলে গেছে। আমরা যে অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছি তাতে, এটিই সবচেয়ে আনন্দের দিন।

তিনি আরও জানান, পার্কে তার এক চাচাতো ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়েছে এবং তারা তালেবানের ক্ষমতায় ফেরা উদযাপন করতে বনভোজনের আয়োজন করেছেন।

অনেকটা রক্তপাতহীনভাবে গত ১৫ আগস্ট তালেবান আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখলে নেয়। এরপর টানা এক মাস অরাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হয় দেশটিতে। ৩১ আগস্ট আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার কাজ সমাপ্ত করে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। এর মাঝেই গুলিতে, বিস্ফোরণে দেশটিতে তিন শতাধিক মানুষ প্রাণ হারান। ভয় আর আতঙ্কে দেশ ছাড়েন বহু আফগান নাগরিক।

এদিকে, তালেবান নতুন সরকার গঠনের এক মাসের মাথায় আবারও অস্থিরতা তৈরি হয়েছে দেশটিতে। আফগানিস্তানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর কুন্দুজের একটি শিয়া মসজিদে গত শুক্রবারও আত্মঘাতী বোমা হামলায় অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছেন, আহত হন আরও শতাধিক। এ হামলার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)।