শিরোনাম
মিশরে দুই সপ্তাহব্যাপী জলবায়ু সম্মেলন (কপ২৭) শুরু হয়েছে গত রোববার (৬ নভেম্বর)। এবারের সম্মেলনের অংশ নিতে ১২০ জনের মতো বিশ্বনেতা ও প্রতিনিধি লোহিত সাগরের তীরে শারম-আল-শেখ শহরে জড়ো হয়েছেন। দুই সপ্তাহ ধরে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে করণীয় কী সেটি নিয়ে আলোচনা করবেন তারা।
সম্মেলনের উদ্বোধনী দিনে জাতিসংঘ জানালো, আমাদের গ্রহ ‘একটি ভয়ানক সংকেত’ পাঠাচ্ছে। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস
সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদন প্রসঙ্গে বলেন, গত আট বছরের রেকর্ডে উষ্ণতা সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছানোর পথে রয়েছে।
কপ২৭-র প্রেসিডেন্ট ও মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ শুকরি সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তৃতায় রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের ফলে খাদ্য ও জ্বালানির যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ঠেকাতে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘শারম-আল-শেখে এটা আমাদের সবার অন্তর্নিহিত বিষয় হচ্ছে আমরা যে চ্যালেঞ্জগুলোর সম্মুখীন হচ্ছি তার ব্যাপকতা সম্পর্কে আমাদের সমঝোতা এবং এটিকে কাটিয়ে উঠতে দৃঢ় সংকল্প নেওয়া’।
জাতিসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সর্বশেষ প্রতিবেদনেও পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরা হয়।
জাতিসংঘ প্রধান গুতেরেস এক ভিডিও বার্তায় জলবায়ুবিষয়ক প্রতিবেদন-২০২২ এর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ‘ধারাবাহিক জলবায়ু বিপর্যয়ের’ কথা তুলে ধরেন।
বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, প্রাক-শিল্প যুগ থেকে বৈশ্বিক তাপমাত্রা এখন ১ দশমিক ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে এবং সর্বশেষ আট বছর রেকর্ডে সর্বোচ্চ উষ্ণ হওয়ার পথে পৃথিবী।
জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনে জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যান্য প্রভাবের বিষয়েও সতর্ক করা হয়েছে। এসবের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, হিমবাহ গলে যাওয়ার রেকর্ড এবং রেকর্ড পরিমাণ তাপপ্রবাহের কথাও উল্লেখ আছে। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস এমন পরিস্থিতিতে কপ২৭ জরুরি ও বিশ্বাসযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
কপ২৭ এর মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে সোমবার। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রতিনিধিরা সম্মেলন থেকে কী চান তার একটি রূপরেখা পাঁচ মিনিট সময় নিয়ে তুলে ধরবেন।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে ফিরতে বিশ্বনেতাদের দ্রুত এগিয়ে আসার আহ্বান জানাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। গত বছর গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত কপ২৬ সম্মেলনে বিশ্বনেতাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি থেকে সরে না আসারও আহ্বান জানাবেন তিনি।
সোমবার ও মঙ্গলবার বিশ্বনেতারা তাদের বক্তব্য তুলে ধরবেন।
২০১৪ সাল থেকে মিশরে ক্ষমতায় রয়েছেন প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাত্তাহ আল-সিসি। ভিন্নমতের ব্যাপক দমন-পীড়নের অভিযোগ রয়েছে সিসির সরকারের বিরুদ্ধে। স্থানীয় মানবাধিকারবিষয়ক বিভিন্ন সংগঠন বলছে, অন্তত ৬০ হাজার রাজনৈতিক বন্দি রয়েছে দেশটিতে। তাদের অনেককেই বিনাবিচারে আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করছে তারা। এবারের জলবায়ু সম্মেলনে অনেক মানবাধিকার সংগঠন জায়গা পায়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সূত্র: বিবিসি