শিরোনাম
ইউক্রেনীয় বাহিনীর হামলায় বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে রাশিয়া অধিকৃত খেরসন শহর। রোববার (৬ নভেম্বর) খেরসনে নিয়োগকৃত রুশ প্রশাসন এমন দাবি করে। টেলিগ্রামে পাঠানো ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ইউক্রেনী বাহিনীর ‘সন্ত্রাসী হামলায়’ খেরসনের বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইউক্রেনের হামলাতেই এমনটি ঘটেছে দাবি করলেও এর সপক্ষে কোনো প্রমাণ দেয়নি পুতিন প্রশাসন।
খেরসনে নিয়োগকৃত রুশ গভর্নর ভ্লাদিমির সালদো বলেন, ইউক্রেনীয় বাহিনীর রকেট হামলায় বারিসলাভ-কাখোভকা মহাসড়কের তিনটি হাই-ভোল্টেজ বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের পিলার ভেঙে পড়ে। এতেই শহরের দুই লাখ ৮০ হাজার মানুষ পুরোপুরি বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
ফেব্রুয়ারিতে রুশ সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর প্রথমবারের মতো এমন তীব্র বিদ্যুৎ সংকটে পড়লো খেরসন। গত মাসে রুশ অধিকৃত ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও কৌশলগতভাবে তাৎপর্যপূর্ণ একটি এলাকা এটি।
গভর্নর ভ্লাদিমির সালদোর বরাত দিয়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রিয় মালিকানাধীন বার্তা সংস্থা তাস বলে, অভিজ্ঞ ইলেকট্রিশিয়ান ও ইঞ্জিনিয়াররা দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎসংযোগ চালু করার কাজ করছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের ধৈর্য্য ধরার অনুরোধ করা হয়েছে।
ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর হামলার মুখে গত মাস থেকে খেরসন থেকে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নিতে শুরু করে রাশিয়া। সে সময় পুতিন প্রশাসন বলেছিল, শত্রুদের বিরুদ্ধে রুশ বাহিনীর প্রস্তুতি ও সক্ষমতা বাড়ানোর কৌশল হিসেবে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে রোববার রাশিয়া দাবি করে, ইউক্রেনীয় বাহিনীর রকেট হামলায় খেরসনের কাখোভকা বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদিন স্থানীয় সময় রাত ১টার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি হিমারস রকেট সিস্টেমের মাধ্যমে ছয়টি মিসাইল ছোড়ে ইউক্রেন। সেগুলোর মধ্যে পাঁচটিকে ভূপাতিত করে রুশ বিমানবাহিনী। বাকি একটি বাঁধটির লক গেটে আঘাত হানে।
অক্টোবর থেকেই রাশিয়া ও ইউক্রেন একে অপরের বিরুদ্ধে কাখোভকা বাঁধ ভাঙার পরিকল্পনার অভিযোগ জানিয়ে আসছিল। এর আগে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মস্কোর পরবর্তী নিশানা ইউক্রেনের জলবিদ্যুৎ প্রকল্প লাগোয়া জলাধার। রাশিয়া যদি এমন জলাধারে হামলা চালিয়ে বাঁধ ধ্বংস করে দেয়, তাহলে বড়সড় মানবিক বিপর্যয় দেখা দেবে।
সেসময় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, রুশ বাহিনীর পরবর্তী লক্ষ্য হলো নিপ্রো নদীর ওপরে নির্মিত কাখোভকা বাঁধ। এ বাঁধ যদি কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে খেরসনসহ ৮০টি এলাকায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দেবে। দেশের দক্ষিণাংশে পানি সরবরাহ প্রায় বন্ধ হয়ে যাবে। এমনকি জাপোরিঝিয়ায় ইউরোপের সর্ববৃহৎ পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটিও পানির অভাবে বন্ধ হয়ে পড়বে।
সূত্র: আল জাজিরা