শিরোনাম
বাংলাদেশসহ বিদেশিদের জন্য ১৫ নভেম্বর থেকে চালু হচ্ছে ভারতের টুরিস্ট ভিসা। বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এমন বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। সূত্র: বাংলানিউজ
এতে বলা হয়েছে, ১৫ অক্টোবর থেকে ট্যুরিস্ট ভিসায় ভারত ভ্রমণের সুযোগ পাবেন বিদেশিরা। তবে তাদের চার্টার্ড ফ্লাইটে আসতে হবে। আর যারা বাণিজ্যিক ফ্লাইটে ভারত ভ্রমণ করতে চান তাদের আগামী ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
তবে ভ্রমণ ভিসা চালু হওয়ার খবর প্রকাশ হতেই খুশি বাংলাদেশ-ভারত উভয় দেশের নাগরিকরা। মেডিক্যাল ভিসা নিয়ে যে সব বাংলাদেশি ভারতে অবস্থান করছেন তারাও এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। ঢাকা থেকে মেডিক্যাল ভিসায় কলকাতায় এসেছেন সানজিদা। তিনি বলেন, ‘চিকিৎসার জন্য গত দুই মাস ধরে দেশের বাইরে। নিয়ম অনুযায়ী সঙ্গে একজনই আসতে পেরেছে। আরও কিছুদিন এখানে থাকতে হবে। ভ্রমণ ভিসা চালু হলে বাচ্চাগুলো আসতে পারবে। পরিবারের লোকজনকে দেখতে পারব। এই সিদ্ধান্তে আমরা খুশি। ’
উত্তরার বাসিন্দা অবন্তিকা। ব্যাক্তিগত কারণে কিছুদিন যাবত কলকাতাতেই আছেন। তিনি কিছুটা দুঃখ করে বলেন, ‘আরও একটু আগে শুরু হলে ভালোই হতো। অন্তত পূজার মৌসুমে পরিবার নিয়ে কলকাতায় কাটাতে পারতাম। ’
তার মতে, ‘এটা ভালো উদ্যোগ। সস্তায় বিদেশ ভ্রমণ বলতে কলকাতার বিকল্প নেই। ছুটির দিনগুলোয় পরিবার নিয়ে আগেও কলকাতা এসেছি। ভিসা চালু হলে আবার আসব। ’
এদিকে টুরিস্ট ভিসায় বিমান পরিষেবা ব্যবহার করতে পারলেও এখনই চালু হচ্ছে না স্থল এবং রেলপথ। তাতেও আফসোস অনেকের। বাড্ডার বাসিন্দা তানজিলা, চিকিৎসার জন্য কলকাতায় আছেন। তিনি বলেন, ‘খবরটা দেখেছি। যতদূর জানি টুরিস্ট ভিসায় বিমান চালু হবে। স্থলপথ, রেল চালু হওয়ার খবর নেই। এগুলোও খুলে দিলে ভালো হয়। ’
অপরদিকে, ট্যুরিস্ট ভিসা চালুর সরকারি সিদ্ধান্তে খুশি ভারতীয়রাও। বিশেষ করে কলকাতার হোটেল ব্যবসায়ীরা। ইন্ডিয়ান মিউজিয়ামের পিছনে মারক্যুই স্ট্রিটের এক হোটলের মালিক নাজিম বলেন, ‘মমতা দিদির ভোটে জেতা আর টুরিস্ট্য ভিসা চালু হওয়া, পূজার সময় দু’দুটো সুখবর। লাড্ডু বিলোতে ইচ্ছে করছে। ’
কলকাতার নিউমার্কেট এলাকায় চার শতাধিক আবাসিক হোটেল আছে। যা সারাবছরই বাংলাদেশিদের দখলে থাকে। স্থানীয় হোটেল মালিকদের তথ্য অনুযায়ী, মারক্যুই স্ট্রিট সংলগ্ন হোটেলগুলোর প্রায় ৭০ ভাগ বোর্ডার বাংলাদেশিরা। তবে, করোনার কারণে ব্যতিক্রম ছিল বিগত প্রায় দেড় বছর।
অর্থনীতিবিদ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়ের অনুরোধ আরও একধাপ বেশি। তিনি জানান, ‘এবার বাংলাদেশ সরকারও ভারতীয়দের জন্য চালু করুক টুরিস্ট ভিসা। কারণ অনেক ভারতীয় এখন বাংলাদেশমুখী। ’ তার মতে, ভিসার আদান-প্রদানে আর্থিক লেনদেনের পাশাপাশি সামাজিক সাংস্কৃতিকও উন্নতি ঘটে। বর্তমানে বাংলাদেশের আমূল পরিবর্তন হয়েছে। নানা কারণে বহু ভারতীয় এখন বাংলাদেশমুখী। ফলে বাংলাদেশ সরকারও যদি ভারতীয়দের জন্য টুরিস্ট ভিসা চালু করে, তাহলে ভালো হয়। অর্থাৎ দুই দেশের ভ্রমণ ভিসা চালু হলে আর্থিক উন্নতির পাশাপাশি ফিরে আসবে হারিয়ে যাওয়া আগের দিনগুলো। এমনটাই মত বাংলাদেশ ও ভারতের নাগরিকদের।