শিরোনাম
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ওপর গুলির ঘটনায় সন্দেহভাজন এক হামলাকারী গুলিতে নিহত এবং সন্দেহভাজন আরেকজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পিটিআই চেয়ারম্যানের সহযোগী রউফ হাসানের উদ্ধৃতি দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার খবরেও এই তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলে একটি লংমার্চে নেতৃত্ব দেওয়ার সময় ইমরান খানের গাড়িবহরে গুলির ঘটনা ঘটে। এসময় পায়ে গুলিবিদ্ধ হন পিটিআই প্রধান। তবে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক নয় বলে জানিয়েছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।
রউফ বলেছেন, এটি ইমরান খানকে হত্যার চেষ্টা ছিল। তবে নিহত হামলাকারীকে কে গুলি করেছে তা নিশ্চিত নয়।
এদিকে, ইমরানের ওপর বন্দুকহামলার ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন। তবে নিহত ব্যক্তিকে হামলাকারী নয়, বরং পিটিআই সমর্থক বলে উল্লেখ করা হয়েছে তাদের প্রতিবেদনে।
খবরে বলা হয়েছে, এদিন ইমরান খানসহ মোট সাতজন আহত এবং পিটিআইয়ের এক কর্মী নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তির নাম মুয়াজ্জেম নওয়াজ বলে জানিয়েছে পাঞ্জাব পুলিশ। তিনি ইমরানের গাড়িবহরকে স্বাগত জানাতে এসেছিলেন।
এ ঘটনায় সন্দেহভাজন এক হামলাকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খবরে উল্লেখ করা হয়েছে।
পিটিআই নেতা ফাওয়াদ চৌধুরী রয়টার্সকে বলেছেন, এটি স্পষ্ট হত্যাচেষ্টা ছিল। ইমরান খান আহত হলেও স্থিতিশীল রয়েছেন। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তার দাবি, বন্দুকধারীকে লোকজন থামিয়ে না দিলে পিটিআই’র পুরো নেতৃত্ব নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতো।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের খবরে বলা হয়েছে, ইসলামাবাদ অভিমুখে পিটিআই’র লংমার্চের সপ্তম দিনে গুজরানওয়ালার আল্লাহওয়ালা চকে ইমরান খানকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। হামলায় তিনি ছাড়া আরও চার থেকে পাঁচজন পিটিআই নেতা আহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে ফয়সাল জাভেদ অন্যতম।
ইমরান ইসমাইল নামে দলটির এক নেতা জানিয়েছেন, পিটিআই চেয়ারম্যানের পায়ে তিন থেকে চারবার গুলি করা হয়েছে।
স্থানীয় বোল টিভির সঙ্গে আলাপকালে ইসমাইল জানান, হামলার সময় তিনি ইমরান খানের পাশেই ছিলেন। হামলাকারী একটি অস্ত্র হাতে সোজা কন্টেইনার ট্রাকের সামনে চলে আসে।
এদিকে, ইমরান খানের ওপর গুলির ঘটনার কিছু্ক্ষণ পরেই গ্রেফতার সন্দেহভাজন হামলাকারীর একটি স্বীকারোক্তি ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন মাধ্যমে। এতে তিনি নিজের মুখে হামলার কথা স্বীকার করেছেন। এ সময় হামলার একমাত্র লক্ষ্য ইমরান খান এবং এর সঙ্গে আর কেউ জড়িত নয় বলে দাবি করেছেন ওই যুবক।
ভিডিওতে দেখা যায়, গ্রেফতার ব্যক্তি বলছেন, ইমরান খান জনগণকে বিভ্রান্ত করছিলেন। সেটি সহ্য করতে না পেরেই তিনি পিটিআই প্রধানকে হত্যার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, আমি তাকে হত্যা করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। আমি শুধু ইমরান খানকেই হত্যা করতে চেয়েছিলাম, আর কাউকে নয়।
ওই যুবক জানান, ইমরান খান লাহোর ত্যাগের পর থেকেই তাকে হত্যার পরিকল্পনা করছিলেন তিনি। এই হামলায় আর কেউ জড়িত কি না জানতে চাইলে হামলাকারী বলেন, আমার সঙ্গে আর কেউ নেই। আমি একা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, অস্ত্র উঁচিয়ে ইমরান খানের দিকে গুলি করার পরপরই হামলাকারীকে ধরার চেষ্টা করেন এক যুবক। এসময় হামলাকারী পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
ভিডিওটি আরও ভালোভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, হামলাকারীকে ধরার চেষ্টা করতে গিয়ে এক ব্যক্তি উপুড় হয়ে পড়ে যান। তিনি আর কখনোই উঠে দাঁড়াননি বলে দাবি করা হচ্ছে কিছু পোস্টে। ধারণা করা হচ্ছে, তিনিই নিহত পিটিআই কর্মী মুয়াজ্জেম নওয়াজ।