শিরোনাম
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট জেইর বলসোনারোকে হারিয়েছেন বামপন্থি নেতা লুইজ ইনাসিও লুলা ডা সিলভা। সম্প্রতি দেশটির সুপ্রিম ইলেক্টোরাল কোর্ট লুলাকে বিজয়ী ঘোষণা করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত পরাজয় স্বীকার করেননি বলসোনারো। ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই তার কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছে না। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
কট্টর ডানপন্থি নেতা বলসোনারো সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বেশ ঘনিষ্ঠ। তাদের রাজনৈতিক মতাদর্শেও বেশ মিল লক্ষ্য করা যায়। এ কারণে বলসোনারোকে প্রায়ই ‘ব্রাজিলের ট্রাম্প’ বলে ডাকা হয়। এবারের নির্বাচনে বলসোনারোর পক্ষে প্রচারণাও চালিয়েছিলেন ট্রাম্প।
রোববার লাতিন আমেরিকার বৃহত্তম দেশটিতে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। এতে শতভাগ ভোটগণনা শেষে দেখা যায়, ৫০ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন লুলা। আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী বলসোনারো পেয়েছেন ৪৯ দশমিক ১০ শতাংশ ভোট।
সংখ্যার হিসাবে লুলা ৬ কোটি ৩ লাখ আর বলসোনারো ৫ কোটি ৮২ লাখ ভোট পেয়েছেন। অর্থাৎ ২০ লাখের বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বামপন্থি নেতা লুলা ডা সিলভা। আগামী ১ জানুয়ারি ক্ষমতাগ্রহণ করবেন তিনি।
এর ফলে ব্রাজিলের ইতিহাসে প্রথমবার ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচনে হেরে বিদায় নিতে হচ্ছে বলসোনারোকে। কিন্তু তিনি যেন বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। ফল ঘোষণার পর থেকেই মুখে কুলুপ এটেছেন এ নেতা। টুইটারে তার শেষ পোস্টটি ছিল ৩০ অক্টোবর মধ্যরাতে।
তবে বলসোনারোর মুখ বন্ধ থাকলেও তার প্রধান মিত্ররা ধীরে ধীরে ভোটের ফলাফল মেনে নিতে শুরু করেছেন। বর্তমান প্রেসিডেন্টের অন্যতম প্রধান সমর্থক সিলাস মালাফিয়া টুইট করেছেন, জনগণের সার্বভৌম ইচ্ছা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
সাও পাওলোর বলসোনারোপন্থি গভর্নর তারসিসিও দে ফ্রেইতাসও লুলার জয়কে স্বীকৃতি দিয়েছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, নির্বাচনের ফলাফল খুব ভালো হয়েছে।
আরেক গুরুত্বপূর্ণ মিত্র ব্রাজিলিয়ান পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের নেতা আর্থার লিরা বলেছেন, নির্বাচনে প্রকাশিত সংখ্যাগরিষ্ঠের ইচ্ছাকে কখনোই চ্যালেঞ্জ করা উচিত নয়।
এমনকি লুলাকে বিতর্কিতভাবে জেলে পাঠানো বলসোনারোপন্থি বিচারক সার্জিও মোরোও নির্বাচনে বামপন্থিদের বিজয়কে স্বীকৃতি দিয়েছেন। টুইটারে তিনি বলেছেন, এটাই গণতন্ত্র।
কিন্তু বলসোনারো ও তার তিন রাজনীতিক পুত্র এখনো হার মানার কথা স্বীকার করেননি। কিছু পর্যবেক্ষক আশঙ্কা করছেন, ব্রাজিলের ডানপন্থি এ নেতা তার মার্কিন মিত্র ডোনাল্ড ট্রাম্পের পদচিহ্নই অনুসরণ করতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্রে গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে হোয়াইট হাউজ ছাড়তে হয় রিপাবলিকান নেতা ট্রাম্পকে। কিন্তু তিনি কখনোই ঠিকভাবে পরাজয় স্বীকার করেননি। বরং ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি বাইডেনের ক্ষমতাগ্রহণ আটকাতে ট্রাম্প ক্যাপিটল হিলের দাঙ্গায় সমর্থকদের উসকে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে অন্তত পাঁচজন প্রাণ হারিয়েছিলেন।