শিরোনাম
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই ট্রাস প্রশাসনের ‘ভুল’ সংশোধনে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন ঋষি সুনাক। পূর্বসূরী লিজ ট্রাসের প্রতি সম্মান জানিয়ে তিনি বলেছেন, দেশের প্রবৃদ্ধির উন্নতি করতে চাওয়া ভুল নয়। এটি একটি মহৎ উদ্দেশ্য। কিন্তু কিছু ভুল করা হয়েছে।
সরকারপ্রধান হিসেবে নিজের প্রথম ভাষণে ঋষি বলেন, এগুলো অসৎ ইচ্ছা বা খারাপ উদ্দেশ্য থেকে জন্মগ্রহণ করেননি, বরং তার পুরোপুরি বিপরীত। তবুও সেগুলো ভুলই।
যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি তার পূর্বসূরীর করা ‘ভুলগুলো সংশোধন করতে’ বদ্ধপরিকর। আর এই কাজ শুরু হবে তাৎক্ষণিকভাবে।
সুনাক বলেন, অর্থমন্ত্রী থাকাকালে নানা স্কিমের মাধ্যমে ‘মানুষ ও ব্যবসার সুরক্ষায়’ সম্ভাব্য সব কিছু করেছিলেন। আজ যুক্তরাজ্য যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে, তা মোকাবিলায় সেই একই চিন্তাধারা নিয়ে আসবেন তিনি।
নতুন প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি শুধু কথায় নয়, কাজে দেশকে ঐক্যবদ্ধ করবো। আমি আপনাদের জন্য দিনরাত কাজ করবো।
এসময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের প্রতিও সম্মান জানান ঋষি সুনাক। জনসনের আন্তরিকতা ও উদারতার কথা মনে রাখবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
ঋষি বলেন, করোনাভাইরাস মহামারি এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পরিস্থিতি কতটা কঠিন হয়েছে উঠেছে, তা তিনি বুঝতে পারছেন।
তবে চাপের কাছে কখনোই মাথানত করবেন না।
তিনি বলেন, আমি ভীত নই। কাজের চাপ কতটা তা জানি এবং আশা করি, সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবো। ঋষি বলেন, আমি দেশকে ভবিষ্যতের পথে নেতৃত্ব দিতে এবং আপনাদের চাহিদাকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে স্থান দিতে প্রস্তত।
এর আগে, মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) বাকিংহাম প্যালেসে রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নতুন সরকারপ্রধানের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন কনজারভেটিভ নেতা ঋষি সুনাক। তার আগে, বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস রাজার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তার পদত্যাগপত্র জমা দেন। রাজার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে পৌঁছে জাতির উদ্দেশ্যে প্রথমবার ভাষণ দেন যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হয়ে রেকর্ড বইয়ের পাতা এলোমেলো করে দিয়েছেন ঋষি সুনাক। প্রথম অশ্বেতাঙ্গ, প্রথম এশীয় বংশোদ্ভূত এবং প্রথম হিন্দু ধর্মাবলম্বী নেতা হিসেবে যুক্তরাজ্য শাসন করছেন ঋষি। এছাড়া, বিগত ২০০ বছরের মধ্যে দেশটির কনিষ্ঠতম প্রধানমন্ত্রীও হয়েছেন তিনি।
১৮১২ সালের পর থেকে যুক্তরাজ্যের কনিষ্ঠতম প্রধানমন্ত্রী হলেন ৪২ বছর বয়সী ঋষি সুনাক। প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর মাত্র সাত বছরের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর পদে পৌঁছানোর রেকর্ডও গড়েছেন তিনি।
এছাড়া, রাজা তৃতীয় চার্লসের কাছ থেকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ পাওয়া প্রথম ব্যক্তিও ঋষি। অর্থাৎ, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ পরবর্তী যুগে শপথ নেওয়া প্রথম ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হলেন তিনি। চলতি বছরে এ নিয়ে তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী পেলো যুক্তরাজ্য।