শিরোনাম
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলতি বছরের শেষের দিকে। বাজওয়ার পর পরমাণু শক্তিধর এই দেশটির নতুন সেনাপ্রধান কে হতে চলেছেন তা নিয়ে ইতোমধ্যেই পাকিস্তানের রাজনীতিতে উত্তাপ দেখা দিয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে নতুন একটি পরিকল্পনা উত্থাপন করেছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান। এতে তিনি আপাতত বাজওয়াকেই মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও সেনাপ্রধান পদে বহাল রাখার কথা বলেছেন।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের সেনাপ্রধান পদে জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়াকে আগামী নির্বাচন এবং নতুন সরকার প্রতিষ্ঠা করা পর্যন্ত রাখতে মেয়াদ বাড়ানো উচিত বলে মত দিয়েছেন ইমরান।
অথচ এই সেনা প্রধানের সঙ্গে বিরোধের জেরেই ইমরান খানকে প্রধানমন্ত্রী পদ হারাতে হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়।
তবে এর পেছনে ইমরান খানের যুক্তি হলো বর্তমান সরকারের নতুন সেনাপ্রধান নির্বাচিত করার অধিকার নেই। সোমবার একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইমরান খান প্রশ্ন করেন, ‘মাত্র ৮৫টি সংসদীয় আসন নিয়ে একজন পলাতক রাজনীতিক কীভাবে সেনাপ্রধান নির্বাচন করতে পারে? তারা যদি নির্বাচনে জিতে আসতে পরে তখন তারা নতুন সেনাপ্রধান বেছে নিতে পারবে, তখন আমার কোনো সমস্যা থাকবে না’।
অনুষ্ঠান সঞ্চালক ইমরানকে প্রশ্ন করেন, ‘সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিন পর নির্বাচন হবে কারণ তার আগে এটা সম্ভব নয়। তাহলে জেনারেল বাজওয়ার অবসর নেওয়ার দিন কী হওয়া উচিত বলে মনে করেন আপনি?’
জবাবে ইমরান খান বলেন, ‘এর উপায় খুঁজে পাওয়া যাবে; এটি কোনো বড় বিষয় না। দেশের উন্নতির জন্য বর্তমান সেনা প্রধানের মেয়াদ বাড়ানোর বিধান পাওয়া যাবে। আইনজীবীরা আমাকে বলেছেন, নতুন সরকারকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে উপায় খুঁজে বের করা যাবে’।
জেনারেল বাজওয়ার মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে আবারও প্রশ্ন করা হলে ইমরান বলেন, ‘...আমি শুধু বলছি যে, দেশ অভূতপূর্ব পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে। এই সময় আমাদের দেশকে সংকট থেকে বের করার জন্য কী সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার সেটি চিন্তা করা উচিত’।
অবিলম্বে নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে যে দাবি পিটিআইয়ের রয়েছে সে বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ইমরান বলেন, নির্বাচন একদিকে যেমন (সব দলগুলোর জন্য) একটি পরীক্ষা, অন্যদিকে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে।
সাবেক এই পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রীর ভাষায়, ‘আমরা যখন ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলাম, তখন পাকিস্তানি বন্ডের ওপর বৈশ্বিক স্তরে ছাড় ছিল ৪ শতাংশ, যা এখন ৫০ শতাংশে পৌঁছেছে। আর এই কারণেই পাকিস্তানের খেলাপি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে’।
তিনি অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকার যেভাবে এগোচ্ছে তাতে তার কোনো সমাধান নেই এবং নতুন নির্বাচন দিয়েই কেবল দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন, একদিকে বন্যা, অন্যদিকে ঋণ খেলাপি হলে আরও বড় বিপর্যয় ঘটতে চলেছে।