শিরোনাম
অনুমান করা হয়েছিল এক রকম। কিন্তু আসল হিসাব অনেকটাই ছাপিয়ে গিয়েছে সেই অনুমানকে! পাকিস্তানে বন্যার জেরে আর্থিক ক্ষতির অঙ্ক চোখ রাঙাচ্ছে দেশের অর্থ ভান্ডারে। বিশেষজ্ঞদের মতে এ বার তার প্রভাব সরাসরি পড়তে চলেছে দেশের সার্বিক বৃদ্ধি এবং বিকাশের উপরে।
সাড়ে ১২০০ কোটি ডলারের আনুমানিক হিসাব পেছনে ফেলে বন্যা কবলিত পাকিস্তানে আর্থিক ক্ষতির অঙ্ক ১৮০০ কোটি ডলার ছুঁয়ে ফেলেছে ইতিমধ্যেই। কেন্দ্রীয় গণনায় এই তথ্য উঠে এসেছে। এই হিসাবে সমর্থন জানিয়েছে বানভাসি প্রদেশগুলোর প্রশাসনও।
তবে স্বাধীন বিশ্লেষকরা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণকে ১৫০০ কোটি থেকে ২০০০ কোটি মার্কিন ডলারের মধ্যে রেখেছেন এবং তাদের আশঙ্কা, এটি আরও বাড়তে পারে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে চাষাবাদ। নষ্ট হয়ে গিয়েছে প্রায় ৮০ লাখ একর জমির ফসল। প্রাথমিক ভাবে যা ৪০ লাখ একর ছাড়াবে না বলেই মনে করা হয়েছিল। এর জেরে এক ধাক্কায় বিপুল পরিমাণে বেড়ে গিয়েছে ক্ষতির বোঝা।
আর্থিক বোঝা বাড়ার পাশাপাশি জিডিপি স্খলনের জেরে দেশের মাথাপিছু আয়ের অঙ্কও কমে আসবে অনেকটাই। এমনটাই দাবি বিশেষজ্ঞদের। তা ছাড়া, দেশ জুড়ে বাড়বে বেকারত্ব এবং দারিদ্র। শতাংশের নিরিখে তা ২১.৯% থেকে ৩৬% পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে। পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে যে, শুধুমাত্র বন্যা পরিস্থিতিই দারিদ্রের দিকে ঠেলে দিয়েছে ১১৮ জেলার অন্তত ৩৭% মানুষকে।
শুক্রবারই পাকিস্তানে এসেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলো ঘুরে দেখছেন তিনি। কথা বলছেন বন্যা-বিধ্বস্ত মানুষদের সঙ্গে। পাশাপাশি রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রতিনিধিরা ঠিক মতো পরিষেবা পৌঁছে দিতে পারছেন কি না তা-ও খতিয়ে দেখছেন তিনি।
পাকিস্তানের চলমান বন্যাকে ভয়াবহ আখ্যায়িত করে তিনি বলেছেন, তিনি ব্যাপক মাত্রার এই ‘জলবায়ু ধ্বংসলীলা কখনও দেখেননি’। একইসঙ্গে এই ধরনের ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতির জন্য ধনী দেশগুলোকেও দায়ী করেছেন তিনি।
দেশটিতে সফরের দ্বিতীয় দিনে শনিবার বন্দর নগরী করাচিতে গুতেরেস বলেন, ‘আমি বিশ্বের অনেক মানবিক বিপর্যয় দেখেছি, কিন্তু আমি কখনোই এই মাত্রায় জলবায়ু ধ্বংসলীলা দেখিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি আজ যা দেখেছি তা বর্ণনা করার মতো কোনো শব্দ আমার কাছে নেই।