ব্রিটিশ রাজপরিবারে ক্ষমতার পালাবদলের নিয়ম

ফানাম নিউজ
  ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৩:২৭

ব্রিটিশ রাজপরিবার সব সময়ই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। বিশ্বের সব মানুষের আগ্রহের বিষয় হিসেবেও বিবেচিত। ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের ইতিহাসও সবারই জানা। সেই ইতিহাস বিস্মৃত না হলেও ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পরিধি এখন অনেক ছোট হয়ে এসেছে। তবে তাদের রাজপরিবার নিয়ে মানুষের আগ্রহের কোনো কমতি নেই।

ব্রিটিশ রাজ্যের ইতিহাস বলতে ভারতীয় উপমহাদেশে ১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যবর্তী ব্রিটিশ শাসনের সময়কালকে বোঝায়। এই শাসনব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল ১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দে, যখন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন ব্রিটিশ রাজ বা রানি ভিক্টোরিয়ার কাছে হস্তান্তর করা হয়।

যুগে যুগে তাদের ক্ষমতার বদল ঘটেছে। তবে তা পরিবারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। কেননা ব্রিটিশ রাজপরিবারের ক্ষমতা মূলত রাজা থেকে রাজার সন্তানের কাছে পৌঁছায়। কোনো রাজা বা রানি যদি মারা যান, তাহলে তার সন্তানের মধ্যে যিনি সবচেয়ে বড়; তিনি ক্ষমতায় বসবেন।

সে হিসেবে, রাজা ষষ্ঠ জর্জের মৃত্যুর পর তার মেয়ে দ্বিতীয় এলিজাবেথ সিংহাসনে বসেন। এর আগে রাজা ষষ্ঠ জর্জ তার বাবা পঞ্চম জর্জের পর দেশটির রাজা নির্বাচিত হয়েছিলেন। তারও আগে ব্রিটিশ সিংহাসনে ছিলেন রাজা পঞ্চম জর্জের মা রানি ভিক্টোরিয়া।

তখন বাবা-মায়ের ছেলে সন্তান না থাকায় রানি ভিক্টোরিয়া ও দ্বিতীয় এলিজাবেথ সিংহাসনে বসার সুযোগ পেয়েছিলেন। কারণ রাজপরিবারের নিয়ম অনুযায়ী, উত্তরসুরীদের মধ্যে যদি ছেলে-সন্তান থাকে এবং সে যদি বয়সে মেয়েদের চেয়ে ছোটও হয়, তারপরও তিনিই রাজ সিংহাসনে বসবেন।

কিন্তু ২০১৫ সালে প্রিন্স উইলিয়ামের মেয়ে প্রিন্সেস শার্লোটের জন্মের পর এ আইনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। ফলে প্রিন্সেস শার্লোট তার ভাই প্রিন্স লুইসের আগে সিংহাসনে বসতে পারবেন, যদি তার তেমন সুযোগ হয়।

বর্তমানে ব্রিটিশ সিংহাসনের উত্তরাধিকারীদের মধ্যে ধারাবাহিকভাবে আছেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের বড় ছেলে এবং প্রিন্স উইলিয়ামের বাবা প্রিন্স চার্লস। তার পরেই প্রিন্স উইলিয়াম সিংহাসনে বসতে পারবেন। প্রিন্স উইলিয়ামের পরে সিংহাসনের দাবিদার তার ছেলে প্রিন্স জর্জ, প্রিন্সেস শার্লোট এবং প্রিন্স লুইস। সেই হিসেবে প্রিন্স হ্যারির ব্রিটিশ সিংহাসনে বসার কোনো সম্ভাবনা নেই।

ফলে নিয়ম অনুযায়ী, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর নতুন রাজা হয়েছেন তার বড় ছেলে চার্লস। তিনি ‘প্রিন্স অব ওয়েলস’ হিসেবে এতদিন পরিচিত ছিলেন। আগামী শনিবার অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নিজেকে ‘রাজা’ হিসেবে ঘোষণা দিতে পারেন। লন্ডনের সেন্ট জেমস প্যালেসে তিনি এ ঘোষণা দেবেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

৮ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। জীবনের ৭০ বছর তিনি ব্রিটেনের সিংহাসনে আসীন ছিলেন। এ বছরই তার সিংহাসনে আরোহণের ৭০ বছর উদযাপিত হয়েছে।

এ খবর ঘোষণা করার সময় রাজপরিবারের টুইট বার্তায় চার্লসকে রাজা ও তার স্ত্রী ক্যামিলাকে ‘দ্য কুইন কনসোর্ট’ বলে উল্লেখ করা হয়। চার্লস মাত্র তিন বছর বয়সে যুবরাজ হয়েছিলেন। এবার ৭৩ বছর বয়সে রাজা হলেন।