শিরোনাম
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে। দীর্ঘতম এ শাসকের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বাকিংহাম প্যালেসের বাইরের প্রাঙ্গণ জনসমুদ্রে পরিণত হয়। এর আগে মধ্য লন্ডনে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে শ্রদ্ধা জানাতে বাকিংহাম প্যালেসের বাইরে জড়ো হতে থাকে সাধারণ মানুষ। সড়কে দাঁড়িয়ে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে দেখা দেখা যায় অনেককে।
যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ৯৬ বছর বয়সে মারা গেলেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) রানির মৃত্যুর ঘোষণা দেয় বাকিংহাম প্যালেস।
রানির মৃত্যুর পরবর্তী অফিসিয়াল ইভেন্টগুলোর পরিকল্পিত সময়সূচীর ঘোষণা আসবে। তবে রানীর মৃত্যুতে যুক্তরাজ্যের মানুষের দৈনন্দিন জীবনে একটি বড় প্রভাব ফেলেছে।
বাকিংহাম প্যালেসে রানির শেষকৃত্যের ঘোষণা আসবে। তবে ১০ থেকে ১১ দিনের মধ্যে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে ব্যাংকগুলো ছুটি ঘোষণা করা হতে পারে। স্কুলও বন্ধ থাকতে পারে। শিক্ষা অধিদপ্তর ও নিয়োজিত প্রশাসন পরামর্শ প্রদান করবে এ বিষয়ে।
ইংলিশ ফুটবল লিগ ও উত্তর আয়ারল্যান্ড ফুটবল লিগের ফুটবল ম্যাচসহ শুক্রবার নির্ধারিত ম্যাচ এরই মধ্যে বাতিল করা হয়েছে। শুক্রবারের অন্যান্য খেলার ইভেন্টগুলোও বাতিল করা হয়েছে।
শুক্রবার ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে টেস্ট ক্রিকেট ম্যাচের দ্বিতীয় দিনের খেলা স্থগিত করা হয়েছে। বাকি পাঁচ দিনের খেলা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত এখনো নিশ্চিত করা হয়নি।
এক মিনিটের নীরবতা পালন করে যুক্তরাজ্যজুড়ে থিয়েটার পারফরম্যান্স অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রানির মৃত্যুর খবর প্রকাশের পর মার্কারি মিউজিক প্রাইজের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়। আগামী ১২ দিনের জন্য বিবিসি সম্প্রচার মাধ্যম বাতিল করেছে তাদের সব কমেডি শো।
মেরিটাইম অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট (আরএমটি) ইউনিয়ন ঘোষণা করেছে যে, ১৫ ও ১৭ সেপ্টেম্বরের পরিকল্পিত ধর্মঘট রানির শ্রদ্ধায় বাতিল করা হবে। শুক্রবারের ধর্মঘটও বাতিল করা হয়েছে।
শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) সেন্ট পলস ক্যাথেড্রালে একটি স্মরণ সভা হবে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির পর থেকে কমনওয়েলথভূক্ত সদস্য দেশগুলোতে পালিত একটি স্মারক দিবস হিসেবে ধরা হয়, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সম্মান জানাতে যারা দায়িত্ব পালনের সময় মারা গেছেন তাদের উদ্দেশে। প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য শীর্ষ মন্ত্রীরা উপস্থিত থাকবেন সেখানে। যেহেতু রানি স্কটল্যান্ডে মারা গেছেন, তার কফিনটি এডিনবার্গের সেন্ট জাইলস ক্যাথেড্রালে থাকবে। কিছুদিন পর হয়তো সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। এরপর কফিনটি লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হবে, যেখানে ওয়েস্টমিনস্টার হলে চারদিন রাখা অবস্থায় শ্রদ্ধা জানানোর জন্য অনুমতি দেওয়া হবে।
শুক্রবার, ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবে, সেন্ট পলস ক্যাথেড্রাল ও উইন্ডসর ক্যাসেলে রানীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ঘণ্টা বাজবে। তার জীবনের প্রতিটি বছরকে চিহ্নিত করতে ৯৬ বার বন্দুক স্যালুট করা হবে ফাঁকা গুলি ছুড়ে।
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। হাঁটাচলা ও দাঁড়িয়ে থাকতে তার সমস্যা হচ্ছিল তার। স্কটল্যান্ডের বালমোরাল ক্যাসলে অবস্থানকালে বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি মারা যান। যুক্তরাজ্যসহ আরও ১৫টি কমনওয়েলথ রাজ্যের রানি ছিলেন তিনি। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের জন্ম ২১ এপ্রিল ১৯২৬ সালে। ১৯৫২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মাত্র ২৫ বছর বয়সে ব্রিটেনের সিংহাসনে বসেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ।
সূত্র: বিবিসি