পাকিস্তানে ‘মহাবিপর্যয়’, মৃত্যু ১৩৫০ ছাড়াল

ফানাম নিউজ
  ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৩:৫৭

যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধার অভিযান চালানো হলেও আটকানো যাচ্ছে না মৃত্যুমিছিল। তীব্র বন্যার জেরে ইতিমধ্যেই পাকিস্তানে মৃতের সংখ্যা ১৩৫০ জন ছাড়িয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির বিপর্যয় মোকাবিলা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বা এনডিএমএ। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৯ জন। দেশটির তিন ভাগের এক ভাগই এখন পুরোপুরি পানির নীচে।

‘মহাবিপর্যয়’- পাকিস্তানের পরিস্থিতির বর্ণনা দিতে গিয়ে বর্তমানে এই শব্দটিই ব্যবহার করছে সরকারি সংগঠনের পাশাপাশি উদ্ধার অভিযানে হাত লাগানো স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা দক্ষিণের প্রদেশগুলোর। যার মধ্যে রয়েছে বেলুচিস্তান, খাইবার পাখতুনখোয়া এবং সিন্ধু। এর মধ্যে মৃতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি সিন্ধু প্রদেশে। এখনও পর্যন্ত সেখানে প্রাণ হারিয়েছেন ১৮০ জন। তার পরেই রয়েছে খাইবার পাখতুনখোয়া। বন্যার জেরে সেখানে মৃত্যু হয়েছে ১৩৮ জনের। তার ঠিক পরেই স্থান বেলুচিস্তানের। এই প্রদেশে মারা গিয়েছেন ১২৫ জন।

বন্যার পানির তোড়ে পুরোপুরি বা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৪ লাখের বেশি বাড়ি। প্রাণ গিয়েছে প্রায় ৯ লাখ গবাদি পশুর। ২০ লাখ একর কৃষি জমির ৯০% ফসল নষ্ট হয়েছে। সরকারের তরফে দাবি করা হয়েছে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১০০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছে।

রবিবার সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে এক সাংবাদিক বৈঠক করেন পাকিস্তানের মন্ত্রিসভার পরিকল্পনা বিষয়ক মন্ত্রী আহসান ইকবাল। সেখানে আন্তর্জাতিক স্তরে সাহায্যের প্রার্থনা করেন তিনি। পাশাপাশি দেশবাসীকে এ-ও আশ্বাস দেন যে, ভয় পাওয়ার কিছু নেই।

তবে সরকার যতই আশ্বাস দিক না কেন, পাকিস্তানে বন্যায় বিপর্যস্ত মানুষের পরিস্থিতি যে কতটা কঠিন তা বোঝা যায় ত্রাণ শিবিরগুলিতে ঢুঁ মারলেই। ৫০ লাখেরও বেশি মানুষের ঠিকানা এখন বেলুচিস্তান, খাইবার পাখতুনখোয়া, সিন্ধু এবং পাঞ্জাব প্রদেশের আনাচে-কানাচে তৈরি হওয়া এই ক্যাম্পগুলোই। এছাড়া দেশজুড়ে ৩ কোটি ৩ ০ লাখ মানুষ স্থানচ্যুত হয়েছেন। বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা ৫ কোটি।

বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই পাকিস্তানে এই প্রাকৃতিক মহাবিপর্যয় নেমে এসেছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। অথচ বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনে পাকিস্তানের দায় মাত্র ১%। পাকিস্তানে বিশ্বের জনসংখ্যার ২.৬ শতাংশ বাস করলেও দেশটি বিশ্বজুড়ে মোট কার্বন নিঃসরনের মাত্র ১ শতাংশের জন্য দায়ী। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা বিশ্বের ৪ শতাংশ হলেও দেশটি ১৩% কার্বন নিঃসরনের জন্য দায়ী।