শিরোনাম
প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির আগে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম– নেটফ্লিক্সের নীতি এটাই। এ কারণে কান চলচ্চিত্র উৎসবে আমেরিকান এই স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের ছবি জায়গা পায় না। কানের অফিসিয়াল সিলেকশনে জায়গা পাওয়া যেকোনও ছবিকে অনলাইনের আগে ফ্রান্সের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে হয়। কিন্তু নিজেদের ব্যবসায়িক মডেল ধরে রাখতে সেই শর্ত শুরু থেকে মানেনি নেটফ্লিক্স। অবশেষে নিয়ম ভাঙতে রাজি হয়েছে স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মটি।
অস্কারজয়ী পরিচালক আলেহান্দ্রো গঞ্জালেজ ইনারিতুর নতুন ছবি ‘বার্ডো, ফলস ক্রনিকল অব অ্যা হ্যান্ডফুল অব ট্রুথস’ নেটফ্লিক্সের আগে যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে।
সম্প্রতি ইতালিতে ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে এর উদ্বোধনী প্রদর্শনী হয়েছে। তিন ঘণ্টা ব্যাপ্তির ছবিটির গল্প মেক্সিকান একজন সাংবাদিক ও প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতার স্মৃতিকে কেন্দ্র করে, যিনি যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হওয়ার আগে স্বল্প সময়ের জন্য দেশে ফেরেন। মেক্সিকোতে একটি সম্মানজনক পুরস্কার পাওয়ার কথা তার।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের দৃষ্টিতে, ‘ছবিটি আনন্দদায়ক, পরাবাস্তব এবং ভিজ্যুয়ালি অভূতপূর্ব।’ ‘বার্ডো, ফলস ক্রনিকল অব অ্যা হ্যান্ডফুল অব ট্রুথস’কে বলা যায়, বাস্তবের কাছে স্বপ্ন ঝাপসা হওয়ার চিত্র। মানুষের পরিচয়, ইতিহাস, অভিবাসন, পরিবার, প্রেম এবং হারানোর মতো বিষয়গুলো রয়েছে এতে।
‘বার্ডো, ফলস ক্রনিকল অব অ্যা হ্যান্ডফুল অব ট্রুথস’-এর মূল চরিত্রের মতোই ইনারিতু এখন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন। তবে তার দাবি, ছবিটি আত্মজীবনীমূলক নয়।
২০১৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দ্য রেভেন্যান্ট’ ছবির সুবাদে অস্কারে সেরা পরিচালক হন ইনারিতু। এর আগে ‘বার্ডম্যান অর দ্য আনএক্সপেক্টেড ভার্চ্যু অব ইগনোরেন্স’ ছবির জন্য সেরা পরিচালক, সেরা চিত্রনাট্যকার ও সেরা প্রযোজক হিসেবে তিনটি অস্কার জেতেন তিনি।
সাত বছর পর ‘বার্ডো, ফলস ক্রনিকল অব অ্যা হ্যান্ডফুল অব ট্রুথস’ ইনারিতুর নতুন নির্মাণ। নেটফ্লিক্সের জন্য এবারই প্রথম কাজ করলেন তিনি।
৫৯ বছর বয়সী মেক্সিকান এই নির্মাতা বলেন, ‘নেটফ্লিক্সের কাছে আমি অনেক কৃতজ্ঞ। তারা আমাকে পূর্ণ সহযোগিতা ও স্বাধীনতা দিয়েছে। শুধু তাই নয়, তারা আমাকে ছবিটি যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোর অনেক প্রেক্ষাগৃহে সাত সপ্তাহের জন্য মুক্তির অনুমতি দিয়েছে। এটি অভূতপূর্ব ব্যাপার, যার ফলে তারা সত্যি প্রশংসার দাবি রাখে।’
ইনারিতুর আশা, তার স্প্যানিশ ভাষার ছবিটি বড় পর্দায় দেখানো হলে উপকৃত হওয়া যাবে। যদিও অনলাইনে ছবি মুক্তির বিরাজমান জোয়ারের বিরুদ্ধে যাওয়ার কোনও ইচ্ছা নেই তার। তিনি উল্লেখ করেন, শিক্ষার্থী হিসেবে ভিডিওতে অনেক মাস্টারপিস চলচ্চিত্র দেখেছেন নিজেই।
ইনারিতুর মন্তব্য, ‘একটি চলচ্চিত্র মানে একটিই। এটি একটি মাধ্যম মাত্র। দর্শকদের যেকোনও সময় শৈল্পিক কাজগুলো দেখার ক্ষেত্রে স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম একটি দারুণ প্রযুক্তি।’
নেটফ্লিক্স জানিয়েছে, ‘বার্ডো, ফলস ক্রনিকল অব অ্যা হ্যান্ডফুল অব ট্রুথস’ আগামী ২৭ অক্টোবর থেকে মেক্সিকোতে সাত সপ্তাহ এবং ৪ নভেম্বর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সীমিত কিছু প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দেওয়া হবে। এরপর ১৬ ডিসেম্বর থেকে এটি স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে উপভোগ করা যাবে।
চলচ্চিত্রে অনেকদিন ধরেই বিপুল বিনিয়োগ করছে নেটফ্লিক্স। ভেনিস আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ৭৯তম আসরে তাদের আরও চারটি ছবি রয়েছে। এরমধ্যে নোয়া বাউমবাকের ‘হোয়াইট নয়েজ’ গত ৩১ আগস্ট উৎসবের উদ্বোধনী ছবি হিসেবে দেখানো হয়। এবারই প্রথম নেটফ্লিক্সের কোনও ছবির মাধ্যমে পর্দা উঠলো এই উৎসবের। এতে অভিনয় করেছেন অ্যাডাম ড্রাইভার ও নোয়ার বাগদত্তা গ্রেটা গারউইগ।
এবারের ভেনিস উৎসবে স্থান পাওয়া নেটফ্লিক্সের অন্য দুটি ছবি হলো হলিউড অভিনেত্রী মেরিলিন মনরোর বহুল প্রতীক্ষিত বায়োপিক ‘ব্লন্ড’ এবং ফরাসি পরিচালক রোমান গাভরাসের ‘অ্যাথেনা’।