শিরোনাম
ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেওয়া প্রস্তাবের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র ও বেশ কয়েকটি পশ্চিমা শক্তিধর দেশের সঙ্গে নতুন করে পারমাণবিক চুক্তি করতে যাচ্ছে ইরান। ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান ইরানের পরমাণু চুক্তি নতুন করে শুরুর বিষয়ে আলোচনার জন্য সেপ্টেম্বরের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন বলে সম্প্রতি দেশটির একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। খবর এএফপির।
একজন সিনিয়র ইসরাইলি কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপিকে বলেন, মোসাদ প্রধান ডেভিড বার্নিয়া ‘ইরান চুক্তির বিষয়ে কংগ্রেসে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে অংশ নিতে এক সপ্তাহের মধ্যে ওয়াশিংটন সফর করবেন’।
তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানাননি তিনি।
এর আগে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী ইয়ার লাপিড ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে বলেছিলেন, ইরানের সঙ্গে নতুন পরমাণু চুক্তির বিরোধিতা করছে ইসরাইল। তেল আবিব ওই চুক্তি মানতে বাধ্য নয়।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী ইয়ার লাপিড ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর কাছে স্পষ্ট করে বলেছেন যে, নতুন করে চুক্তির বিরোধিতা করছে ইসরাইল। এই চুক্তি মানতে বাধ্য নয় ইসরাইল। ইরানকে পরমাণু সক্ষমতা অর্জনে বাধা দিতে ইসরাইল সবকিছুই করবে।
২০১৫ সালে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে এ চুক্তিটি হয়। এখন নতুন করে এটি আবার কার্যকর করা হবে।
আর এ চুক্তির বদলে ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে যুক্তরাষ্ট্রও তার মিত্রা। যার মধ্যে থাকবে বিদেশী ব্যাংকগুলোতে আটকে রাখা ইরানের অর্থ ছাড় ও তেল রপ্তানি।
এর বদলে ইরান তাদের পারমাণবিক কার্যক্রম অনেক কমিয়ে দেবে।
যেদিন চুক্তি করা হবে সেদিনই ইরানের ১৭টি ব্যাংক এবং ১৫০টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে। সেদিনই ইরানও তাদের পারমাণবিক কার্যক্রম কমিয়ে দেবে।
একটি পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে ৯০ ভাগ ইউরোনিয়াম প্রয়োজন হয়। বর্তমানে ইরানের কাছে বোমা তৈরির ৬০ ইউরোনিয়াম আছে। যখন ২০১৫ সালে চুক্তি করা হয় তখন শর্ত ছিল ইরান তাদের ধারণ ক্ষমতার ৩.৬৭ ভাগ ইউরোনিয়াম রাখতে পারবে।
পুনরায় চুক্তি হওয়ার ১২০ দিনের মধ্যে ইরান প্রতিদিন ৫০ মিলিয়ন ব্যারেল তেল রপ্তানি করতে পারবে। তাছাড়া ইরানের কোষাগার থেকে ৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়ও দেওয়া হবে। বর্তমানে যেটি দক্ষিণ কোরিয়ায় আটকে আছে।
আর চুক্তির ১২০ দিন পর ইরান প্রতিদিন ২.৫ মিলিয়ন ব্যারেল তেল রপ্তানি করতে পারবে।
এদিকে ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, চীন এবং রাশিয়া।
কিন্তু ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন এবং ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।
এবার নতুন যে চুক্তি হচ্ছে সেখানে বলা হয়েছে, যদি যুক্তরাষ্ট্র আবারও চুক্তি থেকে বের হয়ে যায় তাহলে তাদের জরিমানা দিতে হবে।